Advertisement
Advertisement

Breaking News

জঞ্জালময় বর্ধমান স্টেশন

স্বচ্ছ ভারত’-এর নামে লজ্জা! আবর্জনায় মুখ ঢেকেছে বর্ধমান স্টেশন

হুঁশ নেই রেলকর্তাদের।

Burdwan station becomes unhygienic for the passengers,
Published by: Paramita Paul
  • Posted:January 3, 2020 8:31 pm
  • Updated:January 3, 2020 8:35 pm  

সৌরভ মাজিবর্ধমান: স্বচ্ছ ভারত। সুস্থ ভারত। বর্ধমান স্টেশনে এলে মনে হবে, বোধহয় এই সব স্লোগান ভারতের নয়, নয়তো বর্ধমান স্টেশন চত্বর ভারতের বাইরে। প্ল্যাটফর্মে থেকে রেললাইন, সর্বত্রই শুধুই জঞ্জাল। স্টেশন থেকে বাইরে বেরলেও একই দৃশ্য। ভ্যাটে আবর্জনা ভর্তি হয়ে রয়েছে। অন্তত পক্ষে সাতদিনের জঞ্জাল জমে রয়েছে। স্টেশন চত্বরের রাস্তার দশাও তথৈবচ। জল জমে প্যাচপ্যাচে অবস্থা। পূতিগন্ধময় পরিবেশ। সাতদিনেরও বেশি সময় ধরে জঞ্জালের উপর দিয়েই যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন হাজার-হাজার যাত্রী। রেলেরও কারও কোনও নজরই নেই। শুক্রবার বর্ধমান স্টেশনের ১ থেকে ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ঘুরে দেখা গেল সর্বত্রই জমে রয়েছে জঞ্জাল। কাগজের খালি প্যাকেট, চিপস, ঠান্ডা পানীয়র টেট্রা প্যাক থেকে শুরু করে কলার খোসা, খালি জলের বোতল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সর্বত্র। কোথাও আবার ডাঁই হয়ে রয়েছে।

Advertisement

হাওড়া-আসানসোল রেল শাখার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন বর্ধমান জংশন। এখান থেকে বর্ধমান-হাওড়া মেন ও কর্ডলাইনের লোকাল ট্রেন চলাচল করে। এখান থেকেই আবার কাটোয়া শাখার ট্রেন চলে। বর্ধমান থেকেই বোলপুর বা উত্তরবঙ্গের বহু ট্রেন চলাচল করে। এই স্টেশনেই থামে পূর্বা, মুম্বই মেল, কালকা মেল-সহ বহু এক্সপ্রেস ও মেল ট্রেন। প্রতিদিন ৫০ হাজারেরও বেশি যাত্রী এই স্টেশন ব্যবহার করেন বলে জানা গিয়েছে। বর্ধমান স্টেশন ব্যবহার করে নিত্য যাতায়াত করেন শহরেই বাসব রায়। তিনি বলেন, “সাতদিনের বেশি সময় ধরেই দেখছি জঞ্জাল সাফাই হচ্ছে না। সর্বত্র নোংরা জমে রয়েছে। প্রাণের শহর বর্ধমান। আর সেখানকার স্টেশনেরই এমন অবস্থা কল্পনাও করা যায় না।” আর এক রেল যাত্রী সুপর্ণা মুখোপাধ্যায় বলেন, “সরকার বলছে স্বচ্ছ ভারত অভিযান। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে প্রচার হচ্ছে। কিন্তু বর্ধমান স্টেশনে এসে সেটা বোঝাই যাচ্ছে না এখন। অস্বচ্ছ ভারতের প্রকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে উঠেছে যেন। সব জায়গাতেই নোরা হয়ে রয়েছে।”

এদিন বর্ধমান স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চানি। এখানকার চিফ ইয়ার্ড ম্যানেজার স্বপন অধিকারীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, “আমি ধানবাদে কাজে গিয়েছি। এখান থেকে বলা সম্ভব নয় ওখানে কী ঘটেছে।” রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠিকাদার সংক্রান্ত সমস্যার কারণে এই পরিস্থিতি হয়েছে। মাসখানেক আগে সাফাইয়ের জন্য রেলের তরফে টেন্ডার করা হয়েছিল। মধ্যপ্রদেশের বিলাসপুরের কোনও এক ঠিকাদার না কি তার বরাত পেয়েছিলেন। কিন্তু এখানে এসে সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখে তিনি পিছিয়ে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি ইফতিকার আহমেদ ওরফে পাপ্পু বলেন, “রেল কর্মী কমাতে চাইছে। তার ফলে এই পরিস্থিতি হয়েছে। আগে ঠিকাদারের অধীনে ৮৬ জন কর্মী কাজ করত। রেল এখন তা কমিয়ে ৩৬ জন করে দিয়েছে। ফলে কোনও ঠিকাদারের পক্ষেই এই কাজ করানো সম্ভব নয়। এবার বিলাসপুরের ঠিকাদার বরাত পেলেও পরিস্থিতি বুঝে তিনি সরে গিয়েছেন।” বছর তিনেক আগে বর্ধমানেরই এক ঠিকাদার কাজের বরাত পেয়েছিলেন। তার মেয়াদ ফুরনোর পর নতুন করে টেন্ডার হয়। কিন্তু নতুন করে বাইরের ঠিকাদার বরাত পেলেও কাজ শুরু হয়নি বলে জানান পাপ্পু।

ছবি: মুকলেসুর রহমান।

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement