সৌরভ মাজি, বর্ধমান: প্রাক-প্রাথমিকের ইংরেজি পাঠ্যবইয়ে U অক্ষরের পরিচিতির জন্য লেখা হয়েছে – UGLY. তার সঙ্গে এক কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের মুখের ছবি দেওয়া, পাশে বাংলায় লেখা হয়েছে ‘কুৎসিত’। যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে বর্ধমানে। বর্ধমানের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ওই স্কুলের প্রাক-প্রাথমিক বিভাগ থেকে অবিলম্বে ওই পাঠ্যবইটি বাতিলের দাবি তুলেছেন অভিভাবকরা। শিশুদের এই ধরনের পাঠদান সঠিক শিক্ষার অঙ্গ নয় বলে মনে করছেন তাঁরা। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রতিবাদে সরব অনেকে।
কয়েকদিন আগে মার্কিন মুলুকে বর্ণবৈষম্যের শিকার জর্জ ফ্লয়েডের খুনের ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে। শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সর্বস্তরের মানুষ এই প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। এই অবস্থায় বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস স্কুলের প্রাক-প্রাথমিকে শিশুদের ভুল শিক্ষা দেওয়ার অভিযোগ উঠল। ‘বাণী প্রকাশনী’র একটি ইংরেজি বই পড়ানো হচ্ছে এই স্কুলে, যে বইয়ে ইংরাজি শব্দ U-এর পরিচিতি হিসেবে আরও বেশ কয়েকটি শব্দের সঙ্গে রয়েছে UGLY, সঙ্গে দেওয়া কৃষ্ণাঙ্গের ছবি।
বর্ধমান শহরের রামকৃষ্ণ পল্লির বাসিন্দা তথা কলকাতার বঙ্গবাসী (সান্ধ্য) কলেজের অধ্যাপক সুদীপ মজুমদারের মেয়ে ওই স্কুলের প্রাক-প্রাথমিকের ছাত্রী। সুদীপবাবু সোমবার বলেন, “এদিনই মেয়েকে পড়াতে গিয়ে দেখি, এসব মানবিকতা বিরোধী পাঠা দেওয়া হচ্ছে।” সঙ্গে সঙ্গে তিনি বিষয়টি পূর্ব বর্ধমান জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) স্বপনকুমার দত্তকে জানান। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক স্কুলের সঙ্গে কথা বলে বইটি বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন।
রৌরকেল্লা এনআইটি-র অধ্যাপক সঞ্জয় দত্ত সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন, অবিলম্বে প্রকাশকের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিৎ। তাঁর কথায়, এইভাবেই ছোট থেকে শিশুমনে ছড়িয়ে দেওয়া হয় ঘৃণার বীজ। অধ্যাপক দিশারী চৌধুরি, শীর্ষেন্দু দত্ত, কৃষ্ণেন্দু গঙ্গোপাধ্যায়রাও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এদিন ‘বাণী প্রকাশনী’র ‘চাইল্ডস স্টাডি’ বইটির লেখিকা রুমা রায়ের সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি। প্রকাশক শিশিরকুমার পাল অবশ্য ভুল স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “বড় ভুল হয়ে গিয়েছে। এজেন্ট বলে আমরা বই বদলে দেব। যত দ্রুত সম্ভব ওই ছবি-শব্দ বাদ দিয়ে নতুন করে বই ছাপিয়ে স্কুলে পৌঁছে দেব। বিনা খরচে তা পড়ুয়াদের দেওয়া হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.