ধীমান রায়, কাটোয়া: সংবাদ প্রতিদিন-এর খবরের জের। দীর্ঘ ১৬ বছর পর মুক্তির স্বাদ পেলেন আউশগ্রামের (Aushgram) সবিতা। প্রশাসনের তরফে তাঁকে উদ্ধার করে ভরতি করা হয়েছে হাসপাতালে।
১৯৯৫ সালে মাধ্যমিকে ভাল নম্বর পেয়ে পাশ করেন বড়াগ্রামের সবিতা ঘোষ। অল্প বয়সে মা মারা যাওয়ায় বাবা শিবব্রত ঘোষ ফের বিয়ে করেন। স্বাভাবিক ছন্দেই চলছিল সবকিছু। আচমকাই মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন সবিতা। পিতৃবিয়োগের পর দাদা-বৌদি তাঁকে একটি ঘরে তালাবন্ধ অবস্থায় রেখে দেন। খাবারও দিতেন না তাঁরা। বোন নিয়মিত খাবার দিয়ে যেত সবিতাকে। এভাবেই কেটেছে ১৬ বছর। সম্প্রতি তাঁর এই দুরবস্থার খবর প্রকাশিত হয় ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’-এ। তারপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
শনিবার আউশগ্রাম ১ নম্বরের বিডিওর নির্দেশে প্রতিনিদল ও পুলিশবাহিনী সবিতাদেবীকে আনতে যান। প্রতিনিধিদলে ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী, আশাকর্মীরা। সবিতার ঘরের দরজা খোলার পর কেউ প্রথমে সেখানে ঢুকতে রাজি হননি। কারণ, ঘরের সর্বত্র ছড়িয়ে মল-মূত্র। বছরের পর বছর ওসবের মধ্যেই থাকতেন ওই মহিলা। এদিন যখন তাঁকে ঘর থেকে বের করা হয় দেখা যায়, সারা শরীরে ময়লার পুরু আস্তরণ। পায়ের নিচে দগদগে ঘা। চুলে জট। সৎবোন কাবেরীদেবী এদিন স্নান করিয়ে দেন সবিতাকে। তারপর তাঁকে তোলা হয় আ্যম্বুল্যান্সে। আউশগ্রাম ১ নম্বরের বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় জানান, আপাতত ওই মহিলাকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। এরপর তাঁকে হোমে স্থানান্তরিত করা হবে। ১৬ বছর বন্ধ ঘরের বাইরে বেরিয়ে অবাক চোখে সবটা দেখলেন সবিতা। দিদিকে সুস্থ জীবনের পথে দেখে খুশির জোয়ারে ভেসেছেন কাবেরীদেবী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.