অর্ক দে, বর্ধমান: কোভিড (COVID 19) আক্রান্ত মাকে হাসপাতালে ফেলে রেখে গিয়েছিল সন্তান। তবে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগিনীকে ফেলে দেননি। পরিবর্তে সকলকে অবাক করে মাত্র ১৫ মিনিটে জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পেসমেকার বসান তাঁরা। আপাতত বিপন্মুক্ত ওই মহিলা। খোঁজ নিল সন্তানও। কোভিড আক্রান্তের ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসককে ধন্যবাদ জানালেন তিনি।
গত শনিবার করোনা উপসর্গ নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি হন বছর পঞ্চাশের অসু বিবি। তিনি পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার শিবপুরের বাসিন্দা। ভরতি হওয়ার পর থেকেই তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ঘন ঘন অজ্ঞান হয়ে যান। পরে কার্ডিওলজিস্ট তাঁকে পরীক্ষা করে দেখেন ওই মহিলার হৃদযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁর পেসমেকার বসানো প্রয়োজন।
কিন্তু এই পরিস্থিতিতে পেসমেকার বসানো চিকিৎসকদের পক্ষে একটি কঠিন সিদ্ধান্ত। পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার স্পেশ্যালিটি উইংস অনাময় হাসপাতালে চিকিৎসকদের পরামর্শ করা হয়। মঙ্গলবার ওই মহিলাকে বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে অনাময় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে পেসমেকার বসানো হয়। বর্ধমান হাসপাতালের চিকিৎসকদের এই উদ্যোগে ওই মহিলার প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। হাসপাতালের সুপার তাপস ঘোষ জানান, “ওই রোগীর জীবন সংশয় ছিল। তাঁকে বাঁচাতে বর্ধমান হাসপাতালের সুপার স্পেশ্যালিটি উইং অনাময় হাসপাতালের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। কারণ, হার্টের চিকিৎসা সেখানেই হয়। একটি আলাদা আম্বুল্যান্সে করে রোগীকে অনাময় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি অপারেশন থিয়েটার স্যানিটাইজ করে রাখা ছিল। ডাক্তারবাবুরাও তৈরি ছিলেন। রোগী পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় পেসমেকার বসানোর কাজ। ১৫ মিনিটের মধ্যেই অস্ত্রোপচার শেষ করে রোগীকে ফের অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।”
অনাময় হাসপাতালের সুপার শকুন্তলা সরকার বলেন, “পরিস্থিতি জটিল ছিল। চিকিৎসকদের টিম দ্রুততার সঙ্গে অস্ত্রোপচার করে। সামান্য দেরি হলে সংকটজনক পরিস্থিতির তৈরি হতে পারত। কিন্তু শেষমেশ এই অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। রোগীকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এটা একটা বড় সাফল্য।” আসু বিবির মেয়ে সালমা বিবি চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “আমরা কেউ মায়ের সঙ্গে থাকতে পারিনি। হাসপাতাল থেকে আমাদের ফোন করে জানান হয়। মায়ের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের জন্যই মা এত বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেলেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.