সৌরভ মাজি, বর্ধমান: লোকসভা নির্বাচনের ৬ মাসের মধ্যে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করাবেন। লোকসভা নির্বাচনের পর মোদি সরকারকে দিয়ে তিনি এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করাবেন। বুধবার বর্ধমানের টাউন হলে নির্বাচনী প্রচারে এসে রাজ্য সরকার ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দরজিৎ সিং আলুওয়ালিয়া। সভায় তিনি বলেন, “রাজ্যে ৪২টি আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিন। লোকসভা কেন্দ্রে ৪২টির মধ্যে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিন আমি বলে যাচ্ছি আপনাদের, ৬ মাসের মধ্যে মোদি সরকারকে দিয়ে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করিয়ে দেব। সন্ত্রাস থেকে মুক্তি করাতে ৬ মাসের বিধানসভা নির্বাচন করিয়ে দেব।”
একটা নির্বাচিত সরকারকে এইভাবে ভেঙে দেওয়ার বিজেপির হুঁশিয়ারি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন শুরু হয়েছে। তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “একটা নির্বাচিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রাপ্ত সরকারকে কেউ এইভাবে ফেলে দিতে পারে না। ফ্যাসিস্টজাতীয় মন্তব্য। আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাব।” একইসঙ্গে তিনি কটাক্ষ করেছেন বিজেপি ও বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রার্থীকে। স্বপনবাবু বলেন, “প্রবাদ আছে না, কুঁজোরও অনেকসময় চিৎ হয়ে শুতে ইচ্ছা করে। আগে উনি নিজের কেন্দ্রে জিতে দেখান। তার পর তো বিধানসভা ভাঙার কথা ভাববেন।”
এদিন টাউন হলের সভার পর বিজেপি প্রার্থীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, একটা নির্বাচিত সরকারকে কীভাবে ভাঙবেন। জবাবে অবশ্য তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার ভেঙে দেব বলিনি। তবে রাজ্যে যে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়েছে তাতে এই এই সরকার চলতে পারেন। রাজ্যকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে বিধানসভা নির্বাচন করানো যায়। সংবিধানে তা আছে।” তাতেই স্পষ্ট বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্য বিধানসভা ভেঙে দেবে তেমনই ইঙ্গিত দিলেন তিনি। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে তৃণমূল। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “উনি জ্যোতিষী কবে থেকে হলেন। নরেন্দ্র মোদি আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন উনি ভাবছেন কী করে। ২০১৯ বিজেপি ফিনিশ। মোদি বিরোধী, সাম্প্রদায়িক বিজেপি বিরোধী ঝড় উঠেছে। তছনছ হবে বিজেপি। বাংলাকে নিয়ে পরে ভাবুক। নিজেরা জিতবে কি না সেটা আগে দেখুক।”
এদিন টাউন হলের প্রার্থীর কর্মসূচিতে সিপিএম-সহ বিভিন্ন দল থেকে বিজেপি বেশ কয়েকজন যোগদান করেন। সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া আইনুল হক দাবি করেন, প্রতিদিনই সিপিএম থেকে কর্মীরা বিজেপিতে যোগদান করছেন। যদিও সিপিএমের দাবি, তাদের কেউ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে না। এদিন টাউন হলের সভায় বিজেপির জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দী, জেলা নেতা গোলাম জার্জিস উপস্থিত ছিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.