ছবিতে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া বিক্ষোভ, ছবি : মুকুলেসুর রহমান।
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বনধের কারণে বারবার পরীক্ষার দিন নিয়ে সিদ্ধান্ত বদল। এর জেরে চূড়ান্ত হয়রানির মুখে পড়লেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় দূরশিক্ষা বিভাগের স্নাতকোত্তরের পরীক্ষার্থীরা। এর জেরে প্রত্যেককে ৬০ শতাংশ নম্বর দেওয়ার দাবিতে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ দেখালেন পরীক্ষার্থীরা। পাশাপাশি যাঁরা এদিন বনধের কারণে পরীক্ষা দিতে আসতে পারেননি, তাঁদেরও নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি করা হয়েছে। যদিও বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বরং কর্তৃপক্ষের পালটা দাবি, এদিন পরীক্ষার্থীদের হাজিরাও প্রায় স্বাভাবিক ছিল।
পরীক্ষার সূচি অনুযায়ী বুধবার দূরশিক্ষা বিভাগের স্নাতকোত্তরে বাংলা ষষ্ঠপত্রের পরীক্ষা ছিল। কিন্তু বিজেপির ডাকা বনধের খবরে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে স্নাতকস্তরের বিভিন্ন বিষয়ের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষাও পিছিয়ে দেওয়া হয়।বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্ত ভাল চোখে দেখেনি রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার রাতে তাই আগের দিনের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায় নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী পরীক্ষাগুলি হবে। আর এই সিদ্ধান্তেই চরম সমস্যায় পড়েন পরীক্ষার্থীরা। এদিন সকালে দূরদূরান্ত থেকে অনেক পরীক্ষার্থীই হাজির হয়েছিলেন গোলাপবাগের দূরশিক্ষা ভবনে। ক্যাম্পাসে পৌঁছে কয়েকশো পরীক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালেয়র এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
আসানসোল থেকে এসেছিলেন বৈশাখি দাস। তিনি বলেন, ‘আমরা এদিন আসতে পারলেও অনেকেই পারেননি। কারণ অবশ্যই বনধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচমকা সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে খুব সমস্যায় পড়তে হয়েছে।’ বাঁকুড়া জয়পুর থেকে এসেছিলেন অভয় মণ্ডল। ষষ্ঠপত্রের পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ার খবরে সপ্তম পত্রের প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত ন’টা জানতে পারি ষষ্ঠপত্রেরই পরীক্ষা হবে বুধবার। তাহলে আমরা তো এই পত্রের জন্য কোনও প্রস্তুতিই নিতেই পারিনি।’ একই দাবি করেন আরও অনেক পরীক্ষার্থী। সংশ্লিষ্ট পরীক্ষায় সকলকেই কমপক্ষে ৬০ শতাংশ নম্বর দেওয়ার দাবি ওঠে। আর যাঁরা চেয়েও পরীক্ষা দিতে আসতে পারেননি তাঁদের বিষয়টিও সহানুভূতির সঙ্গে দেখার দাবিও তোলা হয়েছে।
তবে নির্দিষ্ট সময়েই এদিন পরীক্ষা শুরু হয়। দূরশিক্ষা বিভাগের সহকারী অধিকর্তা অংশুমান গোস্বামী জানান, সেই অর্থে বিক্ষোভ হয়নি। পরীক্ষার্থীরা কিছু দাবি জানিয়েছিল। সেটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সহানুভূতির সঙ্গে দেখবেন। তিনি বলেন, ‘কোনও পত্রের পরীক্ষাতেই সবাই হাজির থাকেন না। এদিনও সেইভাবেই কিছু পরীক্ষার্থী গরহাজির রয়েছেন। তবে সেটা বনধের কারণেই কি না বলা যাবে না।’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, পরীক্ষায় গরহাজিরের সংখ্যা নগন্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.