সৌরভ মাজি, বর্ধমান: এলাকার বাসিন্দাদের দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে বিধায়ক তহবিলের অর্থে দেওয়া হয়েছিল অ্যাম্বুল্যান্স। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে এক কিলোমিটারও চলেনি সেই অ্যাম্বুল্যান্স। শোরুম থেকে এসে পঞ্চায়েত কার্যালয়ের শেডের তলায় একইভাবে পড়ে রয়েছে। তার গায়ে পড়েছে ধুলোর মোটা পুরু আস্তরণ। বাসিন্দাদের একবারের জন্যও কোনও পরিষেবা পাননি। সরকারি অর্থের অপচয়ের দৃষ্টান্ত হয়ে গিয়েছে এই অ্যাম্বুল্যান্স।
পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি-২ ব্লকের দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে পড়ে রয়েছে এই অ্যাম্বুল্যান্সটি। ২০১৫ সালে মেমারির তৎকালীন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক আবু হাসেম মণ্ডল তাঁর বিধায়ক এলাকা তহবিলের অর্থে প্রদান করেছিলেন। একইসময়ে তাঁর বিধানসভা এলাকার পাল্লা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও দুর্গাপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও দুইটি অ্যাম্বুল্যান্স প্রদান করেছিলেন। সেই দুইটি সেখানকার স্বাস্থ্যকেন্দ্র এলাকার বাসিন্দাদের পরিষেবা দিচ্ছে। ব্যতিক্রম ঘটে গিয়েছে দেবীপুরে। সেখানকার স্বাস্থ্যকেন্দ্র অ্যাম্বুল্যান্সটি পেলেও তারা সেটি দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতকে হস্তান্তর করে দেয় সঙ্গে সঙ্গে।
কিন্তু সেই ২০১৫ সাল থেকে এই ২০২০ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত একবারের জন্যও ব্যবহার হয়নি। মেমারির প্রাক্তন বিধায়ক তথা বর্তমানে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কো-মেন্টর আবু হাসেম চৌধুরি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ২০১৫ সালে দেবীপুর পঞ্চায়েত সিপিএম পরিচালিত ছিল। সেই কারণে হয়তো ব্যবহার করা হচ্ছিল না। কিন্তু ২০১৮ সালে ওই পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। তারপরেও অ্যাম্বুল্যান্সটি নাগরিক পরিষেবার কাজে ব্যবহৃত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বিধায়ক। তাঁর মনে হচ্ছে, তিনি দিয়েছেন বলেই হয়তো সেটি ব্যবহার করা হচ্ছে না। স্পষ্টত গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকেই।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েতের অ্যাম্বুল্যান্সটি ব্যবহার করা হলে এলাকার বাসিন্দারাই উপকৃত হতেন। কিন্তু তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে অবশ্য পুরো দায় স্বাস্থ্য দপ্তরের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জয় ক্ষেত্রপাল জানান, পঞ্চায়েতের তরফে সেটি চালানোর ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। চালকের খরচ বহন করা সম্ভব নয়। অপারগতার কথা স্বাস্থ্য দপ্তরকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়। অ্যাম্বুল্যান্স ফেরত নেওয়ার জন্য লেখা হয়। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোনও রকম সদুত্তর মেলেনি। তাই সেটি পড়ে রয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য আধিকারিক হর্ষ দত্ত সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি নতুন এসেছেন। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু জানান, খোঁজ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.