বাঙ্কার তোলার কাজ চালাচ্ছে বিএসএফ। নিজস্ব চিত্র
সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়ায় আন্ডারগ্রাউন্ড বাঙ্কারের হদিশে এখন পরতে পরতে রহস্য। শনিবার সকাল থেকে বাগানের ভিতর পাওয়া ওই বাঙ্কারগুলি মাটির ভিতর থেকে তোলার কাজ শুধু হয়েছে। গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে বিএসএফ। এই বাঙ্কার কবে তৈরি হল? এলাকার বাসিন্দাদের নজর এড়িয়ে কীভাবে এই কাজ হল? সেসব প্রশ্ন উঠে আসছে।
বাঙ্কারের ভিতর থেকে কয়েক লক্ষ বোতল কফ সিরাপ উদ্ধার হয়েছে গতকাল শুক্রবার। অতীতে ওই বাঙ্কারে কি অস্ত্র মজুত রাখা হত? সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। বিএসএফ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এদিন সকালে ওই এলাকায় বিএসএফের বিশাল বাহিনী এসে পৌঁছয়। পে লোডার মেশিন এনে শুরু হয়েছে মাটি কাটার কাজ। তিনটি বাঙ্কার মাটির ভিতর থেকে তোলা হবে। ওই বাগানের মধ্যে আরও একটি বাঙ্কারের খোঁজ মিলেছে বলেও প্রাথমিকভাবে খবর। সেটির ভিতরে কী আছে, তাও জানার চেষ্টা চলছে।
গতকাল রাত থেকেই গোটা এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। কাউকেই আশেপাশে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না। একশোর উপর বিএসএফ জওয়ান সেখানে রয়েছেন। বিএসএফ আধিকারিকরাও সেখানে তদন্তে যাবেন বলে খবর। বেশ কয়েক মাস আগে ওই বাগানে দুটি কন্টেনার এনে রাখা হয়েছিল। পরে আর সেগুলোকে দেখা যায়নি। এমনই জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘন জঙ্গল থাকায় ওই এলাকার ভিতরে বাসিন্দারা যান না বলেও জানা গিয়েছে। কিন্তু মাটি খুঁড়ে ওই বাঙ্কার বানানো হল। সেটি মোটেও এক-দুদিনের কাজ নয়। মেশিন, বহু লোকবলও এই কাজে প্রয়োজন। তাহলে কীভাবে সেসব বাসিন্দাদের নজর এড়িয়ে গেল?
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫ ফুট লম্বা, ১৫ ফুট চওড়া দুটি কন্টেটার মাটির নিচে রাখা হয়। সেগুলিকে আবার লোহার পাত দিয়ে ভাগ করে তিনটি বাঙ্কার বানানো হয়েছিল। সেখানেই থরে থরে সাজানো ছিল ওই নিষিদ্ধ কফ সিরাপ। আটক হওয়া ওই বিপুল কফ সিরাপের বাজারমূল্য ১০ লক্ষ টাকার বেশি।
নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়ার ওই এলাকা থেকে মাত্র ২০ কিমি দূরে গেদের টুঙ্গি সীমান্তের কাঁটাতার। বাংলাদেশে চোরাচালানের জন্য কি এই পথ বেছে নেওয়া হয়েছে? সীমান্ত অবধি কি ওই এলাকায় সুড়ঙ্গও বানানো হয়েছে? সেই আশঙ্কার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছে না বিএসএফ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে অস্থির হয়ে রয়েছে। ভারতের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্যও রাখা হচ্ছে। সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গি ঢোকার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। সেখানে এই বাঙ্কার কি নাশকতার কাজেও ব্যবহারের উদ্দেশ্য রয়েছে? সেসব প্রশ্নও সামনে আসছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.