বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: পার্টির নেতৃত্ব থেকে পক্ককেশীদের সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিল সিপিএম। কার্যত রাজনৈতিক নির্বাসনে যেতে চলেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, শ্যামল চক্রবর্তী, গৌতম দেব, মদন ঘোষের মতো নেতারা। আজ সোমবার থেকে শুরু হওয়া পার্টির রাজ্য সম্মেলন থেকে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে হওয়া রাজ্য সম্মেলনের আজ উদ্বোধন করেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। যা চলবে আগামী ৮ মার্চ পর্যন্ত।
[ রাজ্যে দাঙ্গা রুখলে সাধারণ মানুষকে চাকরির প্রতিশ্রুতি মুখ্যমন্ত্রীর ]
সম্মেলনে আলোচনার জন্য রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক খসড়া প্রস্তাব পেশ করবেন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর, সংগঠনের নেতৃত্বে পক্ককেশীদের ভিড় কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বেঁধে দেওয়া হয়েছে নেতৃত্বের বয়সসীমা। খসড়ার প্রস্তাবে সম্পাদকমণ্ডলী বা রাজ্য কমিটিতে ঢোকার বয়স সর্বোচ্চ ৬০ করা হয়েছে। ফলে ষাটোর্ধ্ব কেউ নতুন করে কমিটিতে জায়গা পাবেন না। আবার কমিটিতে থাকার বয়স সর্বোচ্চ ৭৫ বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ৭৫-এর বেশি বয়স হয়ে গেলে কাউকে কমিটিতে আর রাখা হবে না। বয়সের গেরোয় পড়ে রাজ্য কমিটি ও সম্পাদকমণ্ডলী থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, মদন ঘোষ, দীপক সরকার, শ্যামল চক্রবর্তীদের তাই বাদ যাওয়াটা প্রায় পাকা। যদিও পার্টির সমস্ত কমিটি থেকে আগেই অব্যাহতি চেয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। যদিও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং বিমান বসু-এই দু’জনের পার্টির নেতৃত্বে না থাকাটা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না। বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে আলোচনা না হলেও সম্মেলনের উদ্বোধনে উপস্থিত প্রতিনিধিদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। তাঁদের অনেকেরই যুক্তি, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বা বিমান বসুর যে পরিচিতি, তা পার্টি কাজে লাগাতে পারে। সেই জায়গায় হঠাৎ করে নেতৃত্বে নিয়ে আসা নতুনরা সাধারণ মানুষের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
[ হনুমানের মতো দেখতে ছাগলছানা, চতুষ্পদের অদ্ভুত দর্শনে মেলা লোক ]
অন্যদিকে অসুস্থতার কারণে ইতিমধ্যেই জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন গৌতম দেব। রাজ্য পার্টির দুই শীর্ষ কমিটি থেকেও তিনি সরে যাবেন বলেই ইঙ্গিত মিলেছে। এছাড়াও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেবের যোগ্যতা নিয়ে নেতৃত্বের আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। তাঁকেও সরে যেতে হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে রাজ্য সম্মেলন থেকেই ফাইনাল ম্যাচ অর্থাৎ পার্টি কংগ্রেসের টিম ঝাড়াই-বাছাই হবে। দল গঠনের ক্ষেত্রেও বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। এবার দলে এমন কাউকে রাখা হবে না যাতে ফাইনালে মাঠে নেমে বেসুরো গাইতে শুরু করে প্রতিপক্ষকে সুবিধা করে দেন। তাই জেলাভিত্তিক কোটার পুরনো নিয়ম থাকলেও সেখানেও রদবদল করা হয়েছে। যে জেলার সদস্যরা কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার বিপক্ষে মত দিয়েছিলেন তাঁদের দলে নেওয়ার ক্ষেত্রে আলিমুদ্দিন আরও সতর্ক হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্য কমিটির এক সদস্য। তাই সুকৌশলে বর্ধমান বা কলকাতা জেলার কোটা কমিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রতিনিধি সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে খবর। কী পদ্ধতিতে এই কাজ করা হবে তা অবশ্য গোপন রাখছেন তাঁরা।
[ পুলিশ পিটিয়ে অভিযুক্তকে ‘ছিনতাই’ গ্রামবাসীদের, তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.