জ্যোতি চক্রবর্তী: ভোট আবহে ফের লক্ষ লক্ষ টাকার সোনা উদ্ধার। পেট্রাপোল সীমান্তে চোরাচালানকারীদের ছক বানচাল করল বিএসএফ। গ্রেপ্তার করা হয় দুই সন্দেহভাজন পাচারকারীকে। ধৃতদের কাছ থেকে আনুমানিক ৬৫ লক্ষ টাকার সোনা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জওয়ানদের অবাক করে এক পাচারকারী নাকি চোরাই সোনা লুকিয়ে রেখেছিল নিজের মলদ্বারে।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে সোনা পাচারের ঘটনা নতুন কিছু নয়। এখনও পেট্রাপোল সীমান্তে সক্রিয় পাচারকারীদের চক্র। ফলে চোরাচালানের ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর এই এলাকায় কড়া নজর রাখে বিএসএফ। এক্ষেত্রেও তাদের কাছে খবর ছিল ট্রাকের মাধ্যমে সোনা পাচারের। সেই মতোই সতর্ক ছিলেন জওয়ানরা। বিএসএফের মুখপাত্র জানিয়েছেন, শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের অন্তর্গত একটি ট্রাককে প্রথমে আটক করা হয়। সেই ট্রাকের কেবিনে লুকিয়ে রাখা দুটি সিলভার-কোটেড সোনা কাদা উদ্ধার হয়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে গাড়ির চালক সহিদুল মন্ডলকে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় সহিদুল জানায়, সে একটি পরিবহণ ট্রাক ড্রাইভার হিসাবে কাজ করে। ৪ দিন আগে ভারত থেকে রপ্তানি পণ্য বোঝাই ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশে গিয়েছিল। সেখানকার বেনাপোলের বাসিন্দা রনি শেখ তাকে সোনা পাচারের ৫ হাজার টাকার প্রস্তাব দিয়েছিল। আর তাতে রাজি হয়েই এই সে এই কাজ করেছে। সহিদুল আরও জানায়, ওই সোনা এক অজ্ঞাত ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল।
অন্যদিকে, একইদিনে আরেকটি সোনা পাচারের পরিকল্পনাও ব্যর্থ করে দেন বিএসএফ জওয়ানরা। শুক্রবার সকালে মহম্মদ আলি আবদুল্লাহ কাদার নামে এক যাত্রী নিরাপত্তা ছাড়পত্রের জন্য পেট্রাপোলের বিএসএফ ফ্রিস্কিং পয়েন্টে আসে। তাকে দেখে সন্দেহ হয় জওয়ানদের। সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে কাছাকাছি একটি শৌচালয়ে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়। তখনই তার মলদ্বারের লুকিয়ে থাকা পেস্ট আকারের সোনা-সহ নলাকার আকৃতি দুটি টুকরো উদ্ধার করা হয়। জেরায় কাদার জানায়, কয়েকদিন আগে সে ওমান গিয়েছিল। সেখানে এক বাংলাদেশি ব্যক্তি তাকে ১০ হাজার টাকার লোভ দেখিয়ে ভারতে সোনা পাচারের কথা বলে। জানা গিয়েছে, জওয়ানরা সমস্ত সোনা বাজেয়াপ্ত করে এবং যাত্রী ও চালককে গ্রেপ্তার করেন। দুই পাচারকারী-সহ সোনার জিনিসগুলো পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য পেট্রাপোলের কাস্টম অফিসে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জওয়ানদের এই সাফল্যে খুশি প্রকাশ করেছেন দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের জনসংযোগ আধিকারিক। তিনি জানিয়েছেন, কুখ্যাত চোরাকারবারিরা গরিব ও নিরীহ মানুষকে সামান্য অর্থের প্রলোভন দিয়ে ফাঁদে ফেলে। তিনি সীমান্তে বসবাসকারী লোকদের কাছে আবেদন করেছেন যে তাঁরা যদি সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত কোনও তথ্য পান তাহলে বিএসএফের সীমা সাথী হেল্পলাইন নম্বর ১৪৪১৯ -এ জানাতে পারেন। এছাড়া দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত আরও একটি নম্বর ৯৯০৩৪৭২২২৭ জারি করেছে। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা সোনা চোরাচালান সম্পর্কিত ভয়েস বার্তাও পাঠানো যেতে পারে। সঠিক তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তিকে একটি পুরস্কৃত করা হবে এবং পরিচয় গোপন রাখা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.