ছবি: প্রতীকী
বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: নিজের সার্ভিস রাইফেলের গুলি লেগে মৃত্যু হল এক বিএসএফ জওয়ানের৷ ঘটনাটি নদিয়ার গেদে সীমান্ত এলাকার৷ পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত জওয়ান বছর তিপ্পান্নর এনসি রায়৷ বিএসএফ-এর ৫৪নং ব্যাটালিয়নে কর্মরত ছিলেন অসমের বাসিন্দা ওই জওয়ান৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, নিজের সার্ভিস রাইফেল গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই জওয়ান৷
শনিবার দুপুরে কৃষ্ণগঞ্জ থানার গেদে সীমান্তের হালদার পাড়ার কাছে ডিউটি করছিলেন তিনি৷ হালদার পাড়ার কাছে বর্ডার রোডের ধারে অস্থায়ী ছাউনিতে বসেছিলেন ওই এনসি রায়৷ সঙ্গে ছিল বিএসএফ-এর ইনসাস রাইফেল৷ দুপুর তখন প্রায় বারোটা৷ আচমকাই এন সি রায়ের রাইফেল থেকে গুলি বেরোনোর আওয়াজ পান সীমান্তের অন্যান্য জওয়ানরা৷ শব্দ শুনে তাঁরা ছুটে যান৷ দেখেন, অস্থায়ী ছাউনিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এনসি রায়ের দেহ৷ পাশেই রয়েছে তাঁর সার্ভিস রাইফেলটি৷ তড়িঘড়ি অন্য জওয়ানরা খবর পাঠান গেদে বর্ডার আউটপোস্টে৷ ওই ক্যাম্প থেকে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন আরও কয়েকজন জওয়ান, পৌঁছান বিএসএফ-এর আধিকারিকরাও৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই জওয়ানকে নিয়ে যাওয়া হয় কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে৷ চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সার্ভিস রাইফেলের গুলি ওই জওয়ানের হৃদপিণ্ডের পাশ দিয়ে, পিঠ ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে৷
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ডার রোডের কর্মরত জওয়ানদের জন্য রোদের হাত থেকে বাঁচার জন্য বিচুলি দিয়ে রাস্তার ধারে ছোট অস্থায়ী ছাউনি করা হয়েছে৷ হালদার পাড়ার কাছে তেমনই একটি অস্থায়ী ছাউনিতে ছিলেন মৃত জওয়ান এনসি রায়৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই ছাউনির মধ্যে এনসি রায় তাঁর সার্ভিস রাইফেলটি বুকের বাঁ-দিকে চেপে ধরে ট্রিগার টিপে দেন৷ হার্টের পাশ দিয়ে গুলি ঢুকে ছিটকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে যায়৷ নিজের সার্ভিস রাইফেল থেকে গুলি চালিয়ে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অনুমান পুলিশের৷
প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে, এনসি রায় মানসিক অবসাদগ্রস্ত ছিলেন৷ কাজের চাপে ছুটি না পেয়ে অবসাদ আরও বাড়ছিল৷ তবে অবসাদের পিছনে পারিবারিক অশান্তিকেও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা৷ তবে তিনি কখনওই অবসাদ নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেননি বলেই জানা গিয়েছে৷ কৃষ্ণগঞ্জ পুলিশ মর্গে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে৷ এনসি রায়ের মৃত্যু নিয়ে বিএসএফের আধিকারিকরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.