Advertisement
Advertisement

Breaking News

Jhalda

পুরুলিয়ায় নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলরের দাদা আটক, পুলিশকে দুষলেন বিজেপি সাংসদ

পারিবারিক বিবাদ নাকি রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের শিকার তিনি? জোরাল হচ্ছে প্রশ্ন।

Brother of dead Congress councilor detained at Jhalda, Purulia | Sangbad Pratidin
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 14, 2022 12:47 pm
  • Updated:March 14, 2022 1:32 pm  

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ত্রিশঙ্কু ঝালদা পুরবোর্ড গঠনের ঠিক আগেই গুলিবিদ্ধ হয়ে কংগ্রেস (Congress) কাউন্সিলরের মৃত্যুতে তোলপাড় পুরশহর। রবিবার বিকেলে ঝালদা থানা এলাকার ঝালদা-বাঘমুন্ডি সড়কপথে গোকুলনগর গ্রামের কাছে আততায়ীর গুলিতে জখম হওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় তাঁর দাদা তথা নরেন কান্দুকে আটক করেছে পুলিশ। তবে সোমবার সকাল পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি। পুরুলিয়ার (Purulia) পুলিশ সুপার এস. সেলভামুরুগন বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট মামলা রুজু করা হবে।”

এই খুনের ঘটনা ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে ঝালদা (Jhalda) পুর শহরে। রবিবার বিকেল পাঁচটা দশ নাগাদ ঝালদা-বাঘমুন্ডি সড়কে গোকুলনগরের ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২৫০ মিটার দূরে ঝালদা থানার পুলিশের মোবাইল টহলদারি ভ্যান ছিল। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে পুলিশের সামনে কীভাবে আততায়ীরা কংগ্রেস কাউন্সিলরকে মাথায় গুলি করে পালাল? এদিকে ওই কংগ্রেস কাউন্সিলরকে দেখতে রবিবার রাতেই রাঁচি যান পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ তথা দলের রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। তিনি এই ঘটনায় পুলিশকে দুষে বলেন, “এই ঘটনায় ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষের নামে খুনের মামলা রুজু হওয়া দরকার। আমার ধারণা, এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর সরাসরি যোগ রয়েছে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: নন্দীগ্রাম দিবসে টুইটে শহিদদের শ্রদ্ধা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, একাধিক কর্মসূচি তৃণমূল-বিজেপির]

সাংসদের এই অভিযোগের পর পুরুলিয়ার রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। এদিকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলরের স্ত্রী তথা এই পুর শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর পূর্ণিমা কান্দু। তিনি বলেন, “এইভাবে কংগ্রেসকে দমানো যাবে না। আমি বিচার চাই। যারা এই ঘটনায় যুক্ত তাদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।” এদিকে, আজ বিকেলে ঝালদায় পা রাখছেন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা লোকসভার সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী।

ঠিক কী হয়েছিল রবিবার বিকেলে? বিকাল সাড়ে চারটে নাগাদ তপন কান্দু ঝালদা পুর শহরে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর স্টেশন রোডের বাড়ি থেকে বের হন। ফি দিন তিনি সকাল-বিকাল হাঁটেন। তিনি-সহ তাঁর ছ’জন বন্ধুবান্ধব থাকেন। ওই দিন বিকালেও তাঁরা ঝালদা-বাঘমুন্ডি রোডে হাঁটছিলেন। সামনে নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু ছাড়া আরেকজন ছিলেন। বাকি চারজন ছিলেন পিছনে। সেই সময় ঝালদা দিক থেকে আসা একটি মোটরবাইকে থাকা দু-তিনজন আততায়ী তপন বাবুকে পিছন থেকে মাথায় গুলি করে বলে অভিযোগ। তারপর ওই আততায়ীদের বাইক বাঘমুন্ডির দিকে চলে যায়। নিহত কাউন্সিলরের সঙ্গে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গুলির আওয়াজ শুনে তাঁরা রাস্তা থেকে চাষের জমিতে চলে যান। আততায়ীরা দু’রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থল থেকে বিকালেই পুলিশ গুলির খোল ও ম্যাগাজিন উদ্ধার করে।

Purulia
ঝালদার নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু।

এই ঘটনায় ঝালদা শহরের মানুষ রাতেই পথে নেমে প্রতিবাদে সরব হন। ফলে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে ঝালদা পুর শহরে। পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বাঘমুন্ডির বিধায়ক নেপাল মাহাতো বলেন, “এই ঘটনার পিছনে রাজনীতি রয়েছে। এমন নিচু রাজনীতি ঝালদা পুর শহর আগে দেখেনি। এই ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা করছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।” কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা সমাজসেবী তপন কান্দুর মৃত্যুর ঘটনা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছে না ঝালদা পুরশহর। চারবারের কাউন্সিলর, একবার পুরপ্রধান, একবার উপপুরপ্রধান ছিলেন তিনি। স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু এবার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস থেকে জয়লাভ করে কাউন্সিলর হন।

[আরও পড়ুন: খড়দহে তৃণমূল কাউন্সিলরকে হত্যার নেপথ্যে ভাড়াটে খুনি! রাতারাতি গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত

তাঁর স্বামী তপন কান্দু দু’নম্বর ওয়ার্ড থেকে তাঁর ভাইপো তৃণমূলের দীপক কান্দুকে হারিয়ে ছিলেন। ২০১৫ সালের পুর নির্বাচনে দু’নম্বর ওয়ার্ডে নিহত তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু দীপকের মা বাবি কান্দুর কাছে হেরে যান। ঝালদা পুর শহরের ২ ও ১২ – এই দুটি ওয়ার্ডই নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলরের খাসতালুক ছিল। দীপক কান্দুর বাবা আটক হওয়া নরেন কান্দুর সঙ্গে তপন কান্দুদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। সেই দ্বন্দ্ব রাজনীতিতে জড়িয়ে গেল কি? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ঝালদা পুর শহরে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement