দিব্যেন্দু মজুমদার,হুগলি: কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এবার হুগলির চন্দননগরে। প্রায় এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে দাদার মৃতদেহ আগলে পাহারা দিচ্ছিলেন ভাই। দাদা যে নেই, বুঝতে দেননি কাউকে৷ সোমবার তীব্র পচা গন্ধ বের হতে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর৷ প্রকাশ্যে আসে আসল সত্য৷ প্রতিবেশীরা দেখেন দাদা গোপীনাথ মুখোপাধ্যায়ের মৃতদেহের সামনে বসে রয়েছেন ভাই অপূর্ব মুখোপাধ্যায়৷
[ফের বেআইনি অস্ত্রের হদিশ, দুর্গাপুরে সিআইডি-র জালে তিন দুষ্কৃতী]
জানা গিয়েছে, অনেকদিন ধরেই চন্দননগরের বোড় চাঁপাতলায় বাস করেন মুখোপাধ্যায় পরিবার৷ বাবা প্রয়াত হয়েছেন৷ চার ভাইয়ের মধ্যে দুই ভাই অন্যত্র বাড়ি করে চলে গেলেও, রয়ে যান গোপীনাথ মুখোপাধ্যায় ও অপূর্ব মুখোপাধ্যায়৷ এলাকার মানুষদের সঙ্গে তেমন একটা মিশতেন না তাঁরা৷ নিজেদেরকে আলাদা করে রাখতেই পছন্দ করতেন৷ কেবল টাকা পয়সার দরকার হলে পাড়ার মানুষজনের সাহায্য নিতেন৷ প্রতিবেশীরা জানান, গত কয়েকদিন ধরেই এলাকায় তীব্র পচা গন্ধ অনুভব করছিলেন তাঁরা৷ ভাবছিলেন কোথাও কোনও প্রাণী মরে পড়ে রয়েছে৷ ফলে গুরুত্ব দেননি বিষয়টিকে৷ কিন্তু সোমবার সেই গন্ধ প্রবল আকার ধারণ করলে সন্দেহ হয় প্রত্যেকের৷ মুখোপাধ্যায় বাড়ির জানালা দিয়ে উঁকি মারতেই চক্ষু চড়ক গাছ সকলের৷
[নিঝুম সোনাঝুড়ির বাড়ি, প্রিয় নেতার প্রয়াণে অঘোষিত বনধ বোলপুর-শান্তিনিকেতনে]
তাঁরা দেখেন, ষাট বছরের দাদা গোপীনাথ মুখোপাধ্যায়ের মৃতদেহ আগলে বসে রয়েছেন ভাই অপূর্ব মুখোপাধ্যায়। তাঁকে দরজা খুলতে বললেও রাজি হন না তিনি৷ বিষয়টি জানিয়ে সঙ্গে সঙ্গে চন্দননগর থানায় খবর দেন প্রতিবেশীরা৷ ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ৷ কোনওক্রমে রাজি করিয়ে অপূর্ব মুখোপাধ্যায়কে দিয়েই খোলানো বাড়ির দরজা৷ এরপরই, মৃতদেহ উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে৷ পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি মানসিক বিকারগ্রস্থ৷ সম্ভবত এক সপ্তাহ ধরে মৃতদেহ আগলে বসে রয়েছেন তিনি৷ জানা গিয়েছে, দাদার মৃত্যুতেও কোনেও রকমের হেলদোল নেই অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের মধ্যে৷ দাদার মৃত্যুর বিষয়ে জিজ্ঞাস করলে তিনি বলছেন, ‘দাদা মারা গিয়েছে তো আমি কি করব?’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.