Advertisement
Advertisement

নির্বিচারে ব্রিটিশ আমলের বৃক্ষনিধন, খেজুরিতে বিতর্কে বনদপ্তর

কয়েকশো গাছ কেটে সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা? ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা।

British era trees axed in Khejuri
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:March 12, 2019 2:26 pm
  • Updated:March 12, 2019 2:39 pm  

দীপঙ্কর মণ্ডল: ‘সংরক্ষিত’ এলাকায় ঢুকে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন। পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা খেজুরির কয়েকশো প্রাচীন গাছ নিধন করার অভিযোগ রাজ্যের বনদপ্তরের বিরুদ্ধে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঘোষিত নীতি ‘গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান’। তাহলে সেই সরকারের অধীন একটি দপ্তর কী করে সংরক্ষিত এলাকায় ঢুকে ব্রিটিশ আমলের পুরনো গাছ কেটে ফেলল? প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে এই বিষয়ে কোনও আলোচনা করার প্রয়োজন মনে করেনি বনদপ্তর। দপ্তরের কোন আধিকারিকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, সাধারণ মানুষের পরিষেবায় দেশের প্রথম টেলিগ্রাফ লাইন পাতা হয়েছিল খেজুরিতে। দেশের প্রথম পোস্ট অফিস এখানে তৈরি হয়। ১৮৫১-৫২ সালে জনসাধারণের জন্য ভারতবর্ষের প্রথম টেলিগ্রাফ লাইন চালু হয় খেজুরি থেকে কলকাতা। সপ্তদশ শতকে এখানে যে পোস্ট অফিস ছিল তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। অষ্টাদশ শতকে প্রাচীন এই বন্দর থেকে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ও রাজা রামমোহন রায় বিলেত রওনা হয়েছিলেন। একসময় বন্দর রমরম করে চলত। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে বন্দর ও সংলগ্ন এলাকা ধ্বংস হয়ে যায়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালে এখানে বাতিঘর, ডাকবাংলো-সহ অনেক পরিকাঠামো তৈরি হয়।প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে ইংরেজরাই এখানে বনাঞ্চল তৈরি করেছিলেন। তারপর সেই গাছের ফল পড়ে এলাকাটি একটি স্বাভাবিক অরণ্যের রূপ নেয়। স্বাধীনতার পর এই বনাঞ্চলকে ‘সংরক্ষিত বন’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়। প্রাচীন স্থাপত্যের ভগ্নাংশ এখনও আছে। সেগুলি সংরক্ষণের অভাবে ক্রমশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এখনও খেজুরিতে বাতিঘর ডাকবাংলো প্রভৃতির ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। দেশের প্রথম পোস্ট অফিসকে কেন্দ্র করে যে অরণ্যটি ছিল, সেটি সম্প্রতি ধ্বংস করা হয়েছে। নির্বিচারে বৃক্ষনিধন হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই এলাকায় একটি নার্সারী করা হবে। একটি পার্কও গড়া হবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, খেজুরিতে মাইলের পর মাইল প্রচুর জমি আছে। সেখানে পার্ক বা নার্সারি না করে সংরক্ষিত বন ধ্বংস করে সেখানেই কেন নার্সারি করা হচ্ছে। এর পিছনে অন্য কোনও অভিসন্ধি আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ওয়াকিবহাল মহল।

Advertisement

[ভোটের আবহে ফের উত্তপ্ত শাসন, দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত ৫]

একটি অংশের বক্তব্য, কোটি কোটি টাকার গাছ কেটে তা কারও কারও পকেটে ঢুকতে পারে। খেজুরি হেরিটেজ সুরক্ষা সমিতি, খেজুরি ইতিহাস সংরক্ষণ সমিতি-সহ প্রচুর সংগঠন বৃক্ষনিধনের নিন্দা করেছে। এই এলাকায় দেবদারু, ঝাউ, শিরিষ, আম, তেঁতুল প্রভৃতি প্রচুর গাছ ছিল। যা কিনা ব্রিটিশ আমলের। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, প্রাচীন পোস্ট অফিসকে কেন্দ্র করে যে বনাঞ্চল ছিল তা কেন্দ্রীয় সরকারের। তাহলে সেই জায়গায় কী করে বনদপ্তর সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা করছে? খেজুরি হেরিটেজ সুরক্ষা সমিতির সহ-সম্পাদক সুদর্শন সেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘পোস্ট অফিসকে কেন্দ্র করে ১০ একর জমিতে বনাঞ্চল ছিল। কয়েকশো গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’

[চোপড়ায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের বলি কংগ্রেস সমর্থক, উত্তপ্ত গ্রামে ভাঙচুর-আগুন]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement