নিজস্ব চিত্র
রাজা দাস, বালুরঘাট: মাঠে ছাগল চড়ানো থেকে শুরু করে বাড়ির সব কাজই করতে হয় তাকে। সঙ্গে রয়েছে আর্থিক প্রতিকূলতা। কিন্তু হাজার সমস্যাও দমাতে পারেনি দক্ষিণ দিনাজপুরের সুদীপা মুর্মুকে। পড়াশোনার প্রতি নিষ্ঠা ও অদম্য ইচ্ছাশক্তিই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় সাফল্য এনে দিয়েছে তাকে। এবারের মাধ্যমিকে ৮৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সুদীপা। এই জেলায় একমাত্র আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত এই মেয়েটিকে নিয়ে চর্চা চলছে। তবে আর্থিক অনটন এখন বাধ সেধেছে তার উচ্চ শিক্ষায়।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বটুন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার দাশুল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী তথা মাদারগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা সুদীপা। মাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর ৬০২। জেলায় আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্তদের মধ্যে সুদীপাই সম্ভাব্য প্রথম স্থান অধিকার করেছে। আগামিদিনে চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করার স্বপ্ন দেখে দরিদ্র পরিবারের ছাত্রীটি।
মেয়ের এই অভাবনীয় সাফল্য নিয়ে সুদীপার মা দিপালী বাস্কে জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই মেয়ে পড়াশোনায় ভালো ছিল। কখনও আলাদা করে পড়তে বসার কথা বলতে হতো না। নিজের ইচ্ছায় সময়মতো লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করত মেয়ে। খেলাধুলোতেও উৎসাহ রয়েছে সুদীপার। মেয়ের ভালো রেজাল্ট নিয়ে বেজায় খুশী বাবা সুধীর মুর্মু। কিন্তু বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিই এখন তাঁকে ভাবাচ্ছে। আগামিদিনে মেয়ের স্বপ্ন পূরণ হবে কি না তিনি জানেন না। প্রশাসনের সহযোগিতার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে সুদীপার।
দাশুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিমাই সরকারের কথায়, ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভালো সুদীপা। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহযোগিতায় ছিল। আগামিদিনেও এই সহযোগিতা থাকবে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি তথা আদিবাসী নেতা সন্তোষ হাসদা জানিয়েছেন যে, তাদের মত পিছিয়ে পরা সম্প্রদায়ের কাছে সুদীপার সাফল্য উল্লেখযোগ্য। তাই সুদীপার ইচ্ছা পূরণে তারা পাশে থাকবেন। এনিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন তারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.