ছবিতে মৃত চিত্তরঞ্জন সরকার।
আকাশনীল ভট্টাচার্য ও ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: টোটোর ভিজে সিটে কে বসবেন। তুচ্ছ ব্যাপারে বচসার জেরে প্রাণ হারালেন এক ব্যক্তি। টোটো চেপে যাওয়ার সময় ভিজে সিটে বসা নিয়ে এক সহযাত্রীর সঙ্গে বিবাদ শুরু হয়। টোটো চলাকালীন তুমুল ঝগড়া হয় দু’জনের। টোটো থেকে নামার পর সে বচসা তো থামেইনি, বরং হাতাহাতিতে পরিণত হয়। সেই হাতাহাতিতেই জখম হয়ে রাস্তার উপর লুটিয়ে পড়েন চিত্তরঞ্জন সরকার (৫২) নামে ওই ব্যক্তি। পথ চলতি মানুষ তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার নিমতা থানা এলাকায়। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ঘাতক সহযাত্রী বেপাত্তা। সেই অজ্ঞাতপরিচিয় ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
সোমবার দুর্গানগরের শ্রীনগর থেকে বিরাটি পোস্ট অফিস রুটের একটি টোটোয় চেপেছিলেন দত্তপুকুর থানার কদম্বগাছির বাসিন্দা চিত্তরঞ্জনবাবু। নিমতা থানায় দায়ের করা অভিযোগে তাঁর পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, টোটোতে ওঠার পর সিট নিয়ে এক সহযাত্রীর সঙ্গে বচসা হয় তাঁর। সেই বচসার জেরে অজ্ঞাতপরিচয় ওই সহযাত্রী চিত্তরঞ্জনবাবুকে মারধর করে। সেই মারের চোটেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারায় মামলা রুজু করে অভিযুক্তকে খুঁজছে পুলিশ। এদিকে ঘটনার কিনারা করতে, যে টোটোয় বসা নিয়ে বচসার সূত্রপাত সেটির খোঁজ শুরু করে পুলিশ। টোটোর সন্ধান মেলে। চালকের কাছে ঘটনার বিবরণ চান তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে ওই টোটো চালক জানিয়েছেন, সোমবার দিনভর বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হয়। তার জেরে টোটোর সিটটি ভেজা ছিল। শ্রীনগর মোড় থেকে যাত্রী তোলার পর দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। চালকের কথা অনুযায়ী, দু’জনের কেউ-ই ভেজা সিটে বসতে রাজি নন। একে অপরকে সেখানে বসার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তা নিয়েই বচসা। যাত্রাপথের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ওই দুই যাত্রী তুলকালাম ঝগড়া চালিয়ে যান। প্রান্তিক স্টপেজ বিরাটির পোস্ট অফিসে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। তখনও বিবাদ তুঙ্গে। এরপরই আচমকা হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ, চিত্তরঞ্জনবাবুকে বেধড়ক মারধর করে ওই ব্যক্তি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মারধরের জেরে চিত্তরঞ্জনবাবু নিস্তেজ হয়ে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধার করে সাগর দত্ত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। অভিযুক্তকে খুঁজে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আবেদন জানিয়েছেন মৃতের স্বজনরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.