সৌরভ মাজি, বর্ধমান: প্রায় দেড়মাস ধরে বন্ধ রয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্রেকিথেরাপি পরিষেবা। ফলে সমস্যায় পড়েছেন ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের অনেকে। দূরদূরান্ত থেকে আসা ক্যানসার আক্রান্ত রোগীরা যন্ত্র বিকল হয়ে থাকায় চিকিৎসা না করিয়েই ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কাঠগড়ায় তুলেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের অধীনে দেখভালের দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থাকে। দেড়মাস আগেই তাদের সমস্যার কথা জানালেও, ব্রেকিথেরাপি যন্ত্র সারাতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট কাম ভাইস প্রিন্সিপাল উৎপল দাঁ বলেন, “এইসব যন্ত্রের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে হাইটস নামে একটি সংস্থা। স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে ওই সংস্থাকে ভার দেওয়া হয়েছে। আমাদের তরফে ১ এপ্রিল অভিযোগ জানিয়েছে৷ কিন্তু তাদের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্যদপ্তরেও আমরা বিষয়টি জানিয়েছি।” ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা শুরু হলে নির্দিষ্ট সময় অন্তর রে দেওয়া বা ব্রেকিথেরাপি করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু যন্ত্র বিকল থাকলে রোগীদের সেই সময়ে তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সোমবারই এই হাসপাতালে এসেছিলেন কোচবিহারের দিনহাটার বাসিন্দা এক রোগিণী৷ তাঁর ক্যানসারের চিকিৎসা চলছে বর্ধমান মেডিক্যালে। ব্রেকিথেরাপি করাতে এসে জানতে পারেন, মেশিন বিকল৷ হয়রানির জেরে হাসপাতালে কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখান তাঁর পরিজনেরা৷
যদিও খারাপের মাঝে রয়েছে কিছু সুখবর৷ স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্যানসার চিকিৎসার কেন্দ্র গড়ার কাজ শুরু হল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের পিছন দিকে বাবুরবাগে বিশাল এলাকাজুড়ে টার্শিয়ারি ক্যানসার কেয়ার সেন্টার নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। শুধুমাত্র ভবন, বিদ্যুৎ সাবস্টেশন ও এসি প্ল্যান্ট গড়তেই খরচ হচ্ছে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। এছাড়া আধুনিক যন্ত্রপাতি-সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ হবে আরও প্রায় ৩০ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে এই অত্যাধুনিক ক্যানসার চিকিৎসা কেন্দ্র গড়তে খরচ হবে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট কাম ভাইস প্রিন্সিপাল উৎপল দাঁ জানান, এই কেন্দ্র চালু হলে পূর্ব বর্ধমান তো বটেই পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির রোগীরা এখানে ক্যানসারের উন্নত চিকিৎসা পাবেন। আর কলকাতায় যাওয়ারও প্রয়োজন হবে না। উৎপলবাবু জানান, এই কেন্দ্রে ক্যানসার চিকিৎসার জন্য টেলিকোবাল্ট, ব্রেকিথেরাপি, লিনিয়ার অ্যাক্সিলিরেটর, সিটি স্টিমুলেটরের মতো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য আগামী ২০২০ সালের নভেম্বর মাসের মধ্যে টার্শিয়ারি ক্যানসার কেয়ার নির্মাণের কাজ শেষ করার৷
ছবি: মুকলেসুর রহমান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.