নিজস্ব সংবাদদাতা: অল্প বয়স থেকেই প্রেম৷ সেকথা দুই পরিবার তো বটেই এলাকার লোকেরও অজানা ছিল না৷ দু’জনের শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে৷ এমনকী, ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের কাছে বিয়ের আবেদনপত্রও জমা দিয়েছিলেন দু’জন৷ কিন্তু বিয়ের আগেই উধাও সিভিক ভলান্টিয়ার পাত্র৷ আর তারই প্রতিবাদে এবং বিয়ের দাবিতে পাত্রের বাড়ির সামনে অনশনে বসলেন কলেজপড়ুয়া পাত্রী৷ জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হাকিমপাড়ার এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে৷
পাত্র ধীরাজ দেবনাথ৷ পাত্রী সান্ত্বনা রায়৷ দু’জনেই হাকিমপাড়ার বাসিন্দা৷ অল্প বয়স থেকেই দু’জনের মধ্যে প্রেম-ভালবাসার সম্পর্ক৷ অপেক্ষা ছিল দু’জনের সাবালক হওয়ার৷ ধীরাজ গত কয়েক বছর ধরে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় কর্মরত৷ আর সান্ত্বনা এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে প্রসন্নদেব মহিলা কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছেন৷ দু’জনেই এখন সাবালক৷ সেই অনুযায়ী গত ২৩ আগস্ট দু’জনের রেজিস্ট্রি ম্যারেজ হয়৷ আর তারপর থেকেই বাড়ি থেকে আচমকা উধাও পাত্র ধীরাজ৷ ফলে মহা সংকটে পড়েন সান্ত্বনা৷ কোনও উপায় না দেখে শেষ পর্যন্ত পাত্রের বাড়ির সামনে অনশনে বসে পড়েছেন৷ পাত্র ফিরে না আসা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি৷
সোমবার ধীরাজের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার পাশে বাড়িতে ঢোকার মূল দরজার সামনে সিঁড়ির উপর বসে রয়েছেন সান্ত্বনা৷ মাঝেমধ্যেই গ্রামবাসীরাও খোঁজ খবর নিচ্ছেন৷ সান্ত্বনা বলেন, “গত ১৯ আগস্ট ধীরাজ আমাকে নিয়ে মণ্ডলঘাটে ওর জামাইবাবুর বাড়িতে যায়৷ সেখানে দু’জনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়৷ সেখান থেকে ফিরেই রেজিস্ট্রির জন্য নাম নথিভুক্ত করি দু’জনে৷ রবিবার ছিল বিয়ের দিন৷ তার আগেই পালিয়েছে ধীরাজ৷” সান্ত্বনা জানান, ঘনিষ্ঠ মহলে ধীরাজ বলেছে বিয়ে করবে না৷ সেটা জানতে পেরেই রবিবার রাত থেকে ধীরাজের বাড়ির সামনে অনশনে বসেছেন তিনি৷ এদিকে গ্রামের লোকেরাও বিষয়টি জানতেন৷ সান্ত্বনার দাবিতে তাঁদেরও নৈতিক সমর্থন রয়েছে৷ তাই স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধি বিকাশ বসাক ও গ্রামবাসীরা মিলে সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর ধীরাজদের বাড়ির ভিতরে থাকার ব্যবস্থা করেছেন৷
সান্ত্বনার বাবা পদ্মমোহন রায় বলেন, “ভেবেছিলাম সব ভালয় ভালয় মিটে যাবে৷ রবিবার রেজিস্ট্রি হওয়ার পর ১৯ জানুয়ারি সামাজিক বিয়ের দিনও ঠিক করেছিলাম৷ কিন্তু সব ওলট-পালট হয়ে গেল৷” এদিকে বাড়ি ছেড়ে ছেলের পালিয়ে যাওয়ায় বিস্মিত পাত্রপক্ষও৷ ধীরাজের ঠাকুমা মায়া দেবনাথ জানান, বিয়েতে তাঁদের অমত ছিল না৷ কিন্তু ধীরাজ কেন পালিয়ে গেল, তাঁরা কেউ তা বুঝে উঠতে পারছেন না৷
খবর পৌঁছেছে কীর্তিমান ধীরাজের কর্মস্থলেও৷ তবে লিখিত অভিযোগ জমা না পড়ায় তাঁরাও কার্যত কিছু করতে পারছেন না৷ কোতোয়ালি থানার আইসি আশিস রায় জানান, ধীরাজ নামে পাহাড়পুরের এক সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছে৷ অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.