প্রেমিকের বাড়িতে ভাঙচুর প্রেমিকার পরিবারের।
দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: এক যুবতীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে টানাপোড়েন তুঙ্গে। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবারই তাঁর প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্ত মেয়েটিকে মারধর করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করেছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ধৃতের পরিবারের পালটা দাবি, মেয়েটির পরিবার থেকে সম্পর্ক মেনে নেয়নি। সেই টানাপোড়েনের জেরেই আত্মঘাতী হয়েছে ওই যুবতী। এমনকী প্রেমিকের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালানোরও অভিযোগ উঠেছে মৃতার পরিবারের বিরুদ্ধে।
হুগলির কোন্ননগরের বাসিন্দা রিমা পাল। তাঁর সঙ্গে পঞ্চানন দাসের ছয়-সাত বছরের প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। রিমা উচ্চ শিক্ষিতা এবং চাকুরিরতা। এদিকে প্রেমিক রিমাকে প্রায়শই গালিগালাজ, মারধর করত বলেও খবর। রিমার পরিবার মার্বেল মিস্ত্রী পঞ্চাননের সঙ্গে তাঁর প্রেম মেনে নেয়নি বলে অভিযোগ। যদিও পরে রিমার জেদের কাছে হার মানে তাঁর পরিবার। আগামী রবিবার পঞ্চাননের বাড়িতে বিয়ের কথা বলতে যাওয়ার কথা ছিল। তার আগেই মঙ্গলবার বিকেলে নিজের ঘর থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় রিমার দেহ উদ্ধার হয়। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
রিমার পরিবার ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ, বাড়িতে ঢুকে রিমাকে ঘরে ঢুকিয়ে দরজা-জানলা বন্ধ করে জেয় পঞ্চানন। সেসময় রিমার মা রিক্তাদেবী বাড়িতে ছিলেন না। এর কিছুক্ষণ পরে দরজা খুলে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায় পঞ্চানন। রিক্তাদেবী বাড়ি ফিরে দেখেন, গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে রিমা। সমস্ত সন্দেহ গিয়ে পড়ে পঞ্চাননের উপর। তার বাড়িতে চড়াও হয় রিমার পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, বাড়িতে ভাঙচুরের পাশাপাশি পঞ্চাননের মা ও দিদিকে মারধর করে তারা। এরপর পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতেই পঞ্চাননকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঘটনা প্রসঙ্গে রিমার মা রিক্তা পালের অভিযোগ, প্রথমদিকে পঞ্চাননের সঙ্গে রিমার প্রেমে আমাদের আপত্তি ছিল।পরে মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে সম্পর্ক মেনে নিয়েছিলাম। মেয়েকে প্রায়শই মারধর করত পঞ্চানন। আমরা একথা ওর বাড়িতে জানিয়েছিলাম। শর্ত দিয়েছিলাম, পঞ্চানন যদি এমন করে বিয়ে ভেঙে দেব। মেয়েকে চাকরি ছাড়তে দেব না বলেও জানিয়েছিলাম। রবিবার পাকা কথা বলতে যেতাম। তার আগেই আমার মেয়েটাকে মেরে ফেলল।” এদিকে পঞ্চাননের পরিবারের পালটা অভিযোগ, পঞ্চানন অসুস্থ ছিল, তাই গত সাতদিন বাড়ি থেকে বের হয়নি। মঙ্গলবার স্নান করতে যাচ্ছে বলছে বেরিয়েছিল। বাড়ি আসার পর কয়েকটা মেসেজ ও ছবি আসে ওর ফোনে। দেখে, রিমা ফাঁস দিয়ে ঝুলছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, মেয়েটির বাড়ি থেকে সম্পর্ক মানেনি, সেই টানাপোড়েনই আত্মঘাতী হয়েছে রিমা। যদিও এ নিয়ে পুলিশ কিছু বলতে চায়নি। তদন্তের পরই প্রকৃত সত্য জানা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.