সৌরভ মাজি, বর্ধমান: এক কিশোরের মৃত্যুতে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনার তদন্তের দাবি করেছেন মৃতের পরিবার। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, কোনও ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়নি। আগে থেকেই ওই ইঞ্জেকশন চলছিল। কিন্তু মৃতের পরিবারের সদস্যরা ময়নাতদন্ত করাতে রাজি হননি। রাজি হলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যেত।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম শেখ রাজিবুল (১৬)। বাড়ি বীরভূমের কাঁকড়তলা থানার বাবুইজোড় গ্রামে। স্থানীয় স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রাজিবুল। শুক্রবার সকালে তার মৃত্যুর পর মামা শেখ নিজাম হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা জানান, এই ধরণের একটি ঘটনার কথা তিনি শুনেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মৃতের পরিবার ময়নাতদন্ত না করানোয় মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা সম্ভব নয়। মৃতের পরিবার অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তিনি দাবি করেছেন, রাজিবুলকে এদিন নতুন কোনও ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়নি। ওই ইঞ্জেকশন আগে থেকেই চালু ছিল।
[ ছ’বছরের শিশুকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ, গ্রেপ্তার বৃদ্ধ ]
জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার রাজিবুলকে অ্যাপেনডিক্সে অস্ত্রোপচারের জন্য বর্ধমান মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের সিবিএস মেল (এক্সটেনশন) বিভাগে ভর্তি করা হয়। অস্ত্রোপচার করে অ্যাপেনডিক্স বাদও দেওয়া হয় গত বুধবার। ধীরে ধীরে রাজিবুল সুস্থ হয়ে উঠছিল বলে জানিয়েছেন তার মা তানজিনা বিবি। শনিবার রাজিবুলকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হবে বলে চিকিৎসকরা তাঁদের জানান। এদিন সকালে রাজিবুলকে হাঁটার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। সেই মতো, এদিন তাকে হাঁটানোও হয়। পাশের বেডের রোগীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথাও বলে রাজিবুল। তানজিনা জানান, এর কিছু পরেই ওয়ার্ড অফিস থেকে তাঁদের ডাকা হয়। সেখানে গেলে তাঁদের জানানো হয় রাজিবুলকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে। কিছু পরে একজন নার্স ইঞ্জেকশন দিতে আসেন।
[ খারাপ ফলের জন্য ঠাঁই মিলল না স্কুলে, আত্মঘাতী পড়ুয়া ]
তানজিনা বলেন, “ওই নার্স আমার ছেলের হাতে ইঞ্জেকশন দেয়। তখনই আমার ছেলে জ্বলে গেল জ্বলে গেল বলে ছটফট করতে থাকে। ছেলের মুখ দিয়ে গাঁজলা বেরিয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছটফট করতে করতে মারা যায় ও।” তখনই নার্স সেখান চলে যান বলে অভিযোগ। আর তাঁর দেখা মেলেনি বলে দাবি মৃতের পরিবারের। এই ইস্যু নিয়ে ওয়ার্ড অফিসে চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি কথা বলতে চাননি বলে অভিযোগ। উলটে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল ক্যাম্পের পুলিশকে ডেকে পাঠান তাঁরা। এরপর তাঁরা সুপারের অফিসে গিয়ে নালিশ জানান বলে জানিয়েছেন মৃতের মামা শেখ নিজাম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.