দেবাদৃতা মণ্ডল, চুঁচুড়া: রাজ্যে ফের গণপিটুনিতে মৃত্যু। এবার হুগলির কামারকুণ্ডুতে। চোর সন্দেহে এক সহকর্মীকেই রেলের ঠিকা শ্রমিকরা পিটিয়ে মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বয়স মোটে সতেরো বছর। রেলের ঠিকাদারের অধীনে কাজ করত দীপক মাহাতো নামে এক কিশোর। তার বাড়ি বিহারে। গত কয়েক দিন ধরে রেললাইন তৈরির কাজ চলছে হুগলির কামারকুণ্ডতে। জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রায় জনা পঞ্চাশেক ঠিকা শ্রমিকের সঙ্গে কামারকুণ্ডুতে কাজ করছিল দীপকও। সহকর্মীদের সঙ্গে অস্থায়ী তাঁবুতেই থাকত সে। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে যখন তাঁর তাঁবুতে ঢোকে দীপক, তখন চিৎকার করতে শুরু করেন সুপারভাইজার। অন্য শ্রমিকদের তিনি বলেন, মোবাইল চুরি করতেই তাঁবুতে ঢুকেছে ওই কিশোর। এরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
অভিযোগ, মোবাইল চোর সন্দেহে রাতভর গাছে বেঁধে দীপককে বেধড়ক মারধর করেন অন্য ঠিকাদার শ্রমিক। বুধবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায় কামারকুণ্ডুতে। গুরুতর আহত অবস্থায় দীপক মাহাতোকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সিঙ্গুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে, তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে চিকিৎসকরা। খবর দেওয়া হয় সিঙ্গুর থানায়। ঘটনায় সাতজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে আবার ওই নাবালক কীভাবে রেলের ঠিকা শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিল, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
কখন ছেলেধরা, তো কখনও আবার চোর। স্রেফ সন্দেহের বশেই রাজ্যে গণপিটুনির ঘটনা বাড়ছে। গত রবিবার মধ্যরাতে আলিপুরদুয়ার শহরের তাসাটি চা-বাগানে এক যুবককে ঘোরাফেরা করতে দেখে সন্দেহ হয় শ্রমিকদের। ওই যুবককে বেধড়ক মারধর, এমনকী ধারালো নিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে শূন্য গুলি চালাতে হয় পুলিশকে। আক্রান্ত যুবককে নিয়ে যাওয়া হয় বীরপাড়া হাসপাতালে। কিন্তু তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.