নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: বিদ্যাসাগর কলেজে ঢুকে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙাকে কেন্দ্র করে লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তাল হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবার বনগাঁর নহাটা কলেজে। এবার সংসদ কক্ষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিধানচন্দ্র রায় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ভাঙার অভিযোগ উঠল এবিভিপি সদস্যদের বিরুদ্ধে। অধ্যক্ষের দাবি, দুষ্কৃতীরাই তাণ্ডব চালিয়েছে কলেজে। তবে এবিভিপি যোগ থাকলেও থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার থেকেই নহাটার যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডল স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়। ফলে এদিন কলেজে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের বরণ করে নেওয়ার কথা ছিল। সেই মতো অনুষ্ঠানও শুরু হয়। টিএমসিপি সদস্যদের অভিযোগ, অনুষ্ঠান চলাকালীন কলেজে হামলা চালায় এবিভিপি। সংসদ কক্ষে ঢুকে চেয়ার টেবিল ভাঙচুরের পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিধানচন্দ্র রায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ভাঙচুর করে অভিযুক্তরা।
টিএমসিপি সদস্যদের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন এবিভিপি সদস্যরা। অভিযোগ, কলেজে ঢুকতে গেলে বাধ দেয় টিএমসিপি সদস্যরা। এমনকী তাঁদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। এরপরই কলেজে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে এবিভিপি সমর্থকরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কলেজ ক্যাম্পাস। হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। পরে গোপালনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ প্রসঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘টিএমসিপি ও এবিভিপি দু’পক্ষের তরফেই নবীনবরণের আয়োজন করা হয়েছিল। সকালে টিএমসিপি আয়োজিত অনুষ্ঠান চলছিল। সেই সময় হঠাৎই ভাঙচুরের শব্দ পাই। গিয়ে দেখি তোলপাড় সংসদ কক্ষ।’’ দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলেই অনুমান, তবে এবিভিপির মদত রয়েছে কি না, সে বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুরের পরেও বিভিন্ন মনীষীদের মূর্তিতে আক্রমণ চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। কালি ঢেলে দেওয়া হয়েছে কোনও কোনও মূর্তিতে। প্রশাসনের তরফে নানা পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু তারপরেও বনগাঁর কলেজের এই ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ শিক্ষাঙ্গনে ঢুকে মূর্তি ভাঙচুর ঠিক কী বার্তা দিচ্ছে সমাজকে, উঠছে সেই প্রশ্নও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.