নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: এ যেন একই অঙ্গে বহুরূপী। একাধারে বনগাঁ আদালতের অস্থায়ী মুহুরি। অন্যদিকে জাল আধার ও ভোটার কার্ড তৈরি চক্রের পাণ্ডা। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে দুই ভুয়ো কারবারিকে পাঁচ লিটার নিষিদ্ধ কোডাইন মিক্সচার-সহ হাতে নাতে গ্রেপ্তার করল গোপালনগর থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম অভিজিৎ বিশ্বাস ও সৌরভ বিশ্বাস। ধৃতদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি জাল ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড তৈরির অত্যাধুনিক ল্যামিনেশন পেপার, জাল রাবার স্ট্যাম্প উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়াও ধৃতদের কাছ থেকে রাজ্য পুলিশের কনস্টেবলের ভুয়ো পরিচয় পত্র পাওয়া যায়। ধৃতদের মধ্যে অভিজিতের বাড়ি গোপালনগর থানার নহাটা এলাকায়। সৌরভের বাড়ি বনগাঁ থানার চাঁপাবেড়িয়া এলাকায়।
[চাপের মুখে অবস্থান বদল, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার আরজি গুরুংপন্থীদের]
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, ধৃতরা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ভয় দেখিয়ে তোলাবাজি করত। ধৃত সৌরভ বনগাঁ আদালতে অস্থায়ী মুহুরির কাজ করত। বনগাঁ মহকুমায় পুলিশের জালে ধরা পড়া অবৈধ বাংলাদেশিদের আদালতে তোলার পরই তাদের সঙ্গে মোটা টাকায় রফা করে জাল ভারতীয় প্রমানপত্র তৈরির পাকাপাকি ডিল করত সৌরভ। এই কাজে তাকে সাহায্য করত অভিজিত। অভিজিতের বাবা স্থানীয় বিজেপি নেতা। কোনও কোনও সময় বাবার প্রভাবকেও কাজে লাগাত অভিজিত। অভিজিতের কাছ থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আর্মড পুলিশের কনস্টেবল গ্রেডের একটি ভুয়ো পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। এমনকি কোনও কোনও জায়গায় নিজেকে ভারতীয় বায়ুসেনার একজন কর্মী বলেও পরিচয় দিত অভিজিৎ। এই ভুয়ো পরিচয় প্রমাণ করতে অভিযুক্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর পোশাক পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবিও পোস্ট করত।
[দ্বিতীয়বার কন্যাসন্তানের জন্ম, সদ্যোজাতকে ‘খুন’ বাবা-মায়ের]
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস আগে বনগাঁ থানার পুলিশ হানা দিয়ে বনগাঁ শহরের রেট পাড়া এলাকা থেকে জাল ভোটার ও আধার কার্ড তৈরি চক্রে জড়িত দুই পাণ্ডাকে গ্রেপ্তার করে। তল্লাশি চালিয়ে ওই গোপন ডেরা থেকে পুলিশ ওই সময় অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি, জাল রাবার স্ট্যাম্প, প্রচুর জাল পরিচয় পত্র উদ্ধার করে। ধৃতদের জেরা করে বনগাঁ আদালতের কয়েক জন মুহুরির নাম জানতে পারে পুলিশ। ধৃত সৌরভ ও অভিজিৎ ওই কারবারে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃতরা আদালতকে অন্ধকারে রেখে অবৈধ বাংলাদেশিদের কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়ে জাল ভোটার কার্ড তৈরি করে আদালতে পেশ করত বলে জানা যায়। শুক্রবার ধৃতদের আদালতে তুলে পাঁচ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় পুলিশ। এই চক্রে জড়িত মূল পাণ্ডাদের খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ধৃতদের জেরা করে বাকিদের খোঁজ মিলবে বলে অনুমান পুলিশের।
[সিলিন্ডার নাড়ালেই বেরোচ্ছে জল! অবাক কাণ্ড রানাঘাটে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.