সংবাদদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইদানীং দুর্গাপুজো মানেই যেন থিমের বাহার। শুধু মণ্ডপ নয়, দুর্গা প্রতিমার গায়েও লেগেছে থিমের আঁচ। এত থিমের চাপে হাঁপিয়ে উঠলে ঘুরে দেখতে পারেন বনেদি বাড়ির পুজো (Bonedi Barir Durga Puja)। পুজোজুড়ে তাঁদের সাবেকিয়ানা, রীতিনীতি, পারিবারিক বন্ধনের জৌলুস মন কাড়তে বাধ্য। তাই শহরের থিমের ভিড় ছেড়ে চাইলেই স্বাদ নিতে পারেন রাজবাড়ির পুজোর।
আজ রইল মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের তিন রাজবাড়ির পুজোর হদিশ।
তমলুক রাজবাড়ি
বহু প্রাচীন এই পুজো। ৫০০ বছর পুরনো এই পুজো মূলত রাজকুমারী ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের মহিলাদের দ্বারায় পরিচালিত হত। পরবর্তী সময় এই পুজো আদি তাম্রলিপ্ত সার্বজনীন দুর্গোৎসবের রূপ পেয়েছে। বিগত ১৬ বছর ধরে এলাকাবাসীদের নিয়ে সমস্ত রকম রীতি মেনেই এই দুর্গাপুজোর অনুষ্ঠান এখন সর্বজনীন রূপ নিয়েছে। অতীতের সেই জৌলুস না থাকলেও উদ্দীপনার খামতি নেই। খসে পড়েছে পলেস্তারা। হারিয়ে গিয়েছে সরগরম রাজসভা কিংবা নাচমহল। ভগ্নস্তুপের মাঝেই স্মৃতি চিহ্ন হিসেবে দাঁড়িয়ে কেবল জরাজীর্ণ লাল চুনসুড়কির দেওয়াল। তাও আবার সংস্কারের অভাবে সংকটের মুখে। বহু প্রাচীন তাম্রলিপ্ত রাজবাড়ি কৌলিন্য হারালেও সেই সাবেকিয়ানা বজায় রাখতে মরিয়া প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম।
মহিষাদল রাজবাড়ি
কলকাতা থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে শ্বেতশুভ্র মহিষাদল রাজবাড়ি। হাওড়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব লাইনের ট্রেনে চাপলে নামতে হবে মহিষাদলে। সেখান থেকে ২ কিলোমিটার দূরেই মহিষাদল রাজবাড়ি। সড়ক পথেও বম্বে রোড ধরে নন্দকুমার হয়েও পৌঁছনোও যায় সেখানে। রাজবাড়ির পুজো প্রায় আড়াই শো বছর পুরনো। ১৭৭৮ সালে রানি জানকী দেবী রাজবাড়িতে পুজোর প্রচলন করেছিলেন। পুজো হয় রঙ্গিবসনার দুর্গামন্দিরে। দেবীকে সাজানো হয় ডাকের সাজে। তবে পুজোয় তেমন জাঁকজমক নেই। দুর্গাপুজো শুরু করার পরই খরার মধ্যেও গ্রামে ভাল ধান ফলেছিল। তাই ভালো ফসলের আশায় আজও দেবীর পাশে ধান রাখা হয়। পুজোয় ১০৮টি নীল পদ্ম দেওয়ার চলও রয়েছে। পুজোয় রাজবাড়িতে থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। ভাড়া ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা।
ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি
ঝাড়গ্রাম রাজ পরিবারের দুর্গাপুজো প্রায় ৪০০ বছর পুরনো। দেবী পটেশ্বরী রূপেই পূজিতা হন। পুজো শুরু হয় দুর্গাপুজোর ১৫ দিন আগে। প্রাচীন ঐতিহ্য মেনেই হয় পুজো। রাজবাড়িতেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানকার ‘দ্য প্যালেস ঝাড়গ্রাম’ রিসোর্টে ১৪টি ঘর রয়েছে। রাজকীয় খাওয়া-দাওয়ারও ব্যবস্থা থাকছে ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.