ছবি: প্রতীকী।
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: খেলতে খেলতে মাংসের হাড় মুখে ভরে নিয়েছিল খুদে। আচমকাই শ্বাসনালিতে আটকে যায় সেই হাড়। হুগলির হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁরা কোনও ঝুঁকি নিতে চায়নি। এরপরই পরিবারের লোকেরা বছর দেড়েকের শিশুকে নিয়ে চলে যান বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। জরুরি ভিত্তিতে ব্রঙ্কোস্কপি করে শিশুটির প্রাণ বাঁচালেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
হুগলির আরামবাগের গোঘাটের রামানন্দপুরের বাসিন্দা শের আলি খান। তাঁরই মেয়ে ওই খুদে কোয়ারিনা খাতুন। সবে হামাগুড়ি দিতে শিখেছে সে। তাই সারাক্ষণই হামা দিয়ে ঘরময় ঘুরে বেড়ায়। শের আলি জানান, শুক্রবার সকালের দিকে বাড়িতেই হামা দিয়ে ঘুরছিল সে। আচমকা পড়ে থাকা মাংসের হাড়ের টুকরো তুলে মুখে দেয়। বাড়ির কেউ তা খেয়াল করেনি। হাড়টি খাদ্যনালীতে না ঢুকে বাঁ দিকে মূল ব্রঙ্কাসে গিয়ে আটকে যায় শিশুটির। কষ্ট পেতে থাকে খুদে। কান্নাকাটি শুরু করে সে। পরিবারের লোকেরা শিশুটিকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে চিকিৎসারা তাঁদের ফিরিয়ে দেন। ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় কোয়ারিনাকে। পরীক্ষার পর নাক-কান-গলা চিকিৎসকরা ব্রঙ্কোস্কপি করার সিদ্ধান্ত নেন। শল্য চিকিৎসক গণেশচন্দ্র গায়েন, ঋতম রায় ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট পড়ুয়াদের নিয়ে টিম তৈরি করা হয়। অ্যানাস্থেসিস্ট ছিলেন চিকিৎসক বিকাশ বিষয়ি। সকলের মিলিত চেষ্টায় ব্রঙ্কোস্কপি করে ওই শিশুর গলা থেকে মাংসের হাড়ের টুকরোটি বের করা হয়।
শিশুটির বাবা বলেন, “আমরা হুগলি থেকে মেয়েকে গিয়ে সোজা বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে আসি। এখানে জরুরি বিভাগে দেখানোর পরই ভরতি করে নেওয়া হয়।” চিকিৎসক ঋতম রায় জানান, শিশুটি সুস্থ রয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরি ভিত্তিতে ব্রঙ্কোস্কপি করতে না পারলে শিশুটির প্রাণ সংশয় হতে পারত। হাসপাতালের পরিষেবায় খুশি পরিবারের লোকজন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.