ধীমান রায়, কাটোয়া: ব্যাপক বোমাবাজি ঘিরে উত্তপ্ত পূর্ব বর্ধমানের ভাতার জেলার এরুয়া গ্রাম। অভিযোগ, শুক্রবার সকালে গ্রামে বোমাবাজি করে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। দুই অভিযুক্তকে ধরে গণধালাই দেয় গ্রামবাসীরা। আপাতত তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে গিয়েছে এলাকার পুলিশ। তবে তাদের বক্তব্য ঘরে ফিরতে গিয়েই বিক্ষোভের মুখে পড়ে তারা। তাদের বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ মিথ্যে।
জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন থেকেই রাজনৈতিক সংঘর্ষের কারণে উত্তপ্ত ছিল ভাতারের এরুয়া গ্রাম। অভিযোগ, গত সপ্তাহে বিজেপি কর্মীরা গ্রামবাসীদের বাড়িতে এসে বোমাবাজি চালিয়েছিল। বিশেষ করে এলাকার তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে বোমাবাজি করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর থেকে এলাকায় চলছিল পুলিশি নজরদারি। গোটা ঘটনায় এমনিতেই উত্তপ্ত ছিল এলাকা। তার উপর শুক্রবার সকালের ঘটনায় আগুনে ঘি পড়ল।
অভিযোগ, বিজেপি আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতী এলাকায় বোমাবাজি চালাচ্ছিল। তাদের রুখতে সচেতন ছিল গ্রামবাসীরা। এছাড়া তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকরাও নজর রাখছিলেন। শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ দুই দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, দু’জনেই বিজেপি আশ্রিত। অভিযোগ, বোমাবাজি করতে এসেই গ্রামবাসীদের হাতে ধরা পড়ে ওই দু’জন। ধরে ফেলার পর তাদের গণধোলাই দেয় এলাকার মানুষ। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
[ আরও পড়ুন: টলিপাড়া নয়, শঙ্কুদেবকে মূলধারার রাজনীতিতেই চান মুকুল রায় ]
তবে প্রথমেই ওই দু’জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়নি গ্রামবাসীরা। ঘটনাস্থলে আসার পর পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। তবে পরে আহতদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। পরে তাদের স্থানান্তরিত করা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এলাকা থেকে আরও ৮-১০টি বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। সেগুলি নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া একটি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ওই দুই ব্যক্তির নাম শেখ হায়দার ও শেখ রোবু। তাদের বক্তব্য, গত সপ্তাহের ঘটনার পর এলাকার অনেক বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া। তারাও গ্রামের বাইরে ছিল। এদিন ঘরে ফিরতে গিয়েই বিক্ষুদ্ধ মানুষের সম্মুখে পড়ে যায় তারা। কিছু বোঝার আগেই শুরু হয় গণধোলাই। তবে ঘটনায় তাদের কোনও দোষ নেই বলে জানিয়েছে হায়দার ও রোবু। ভাতার পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মানগোবিন্দ অধিকারীর অভিযোগ, আগের ঘটনার জন্য পুলিশ সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার করছিল। কিন্তু বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি তারা। বিজেপি এলাকা অশান্তি করতে চাইছে। কিন্তু পুলিশের যতটা সক্রিয় হওয়া দরকার, তারা ততটা হচ্ছে না।
ছবি- জয়ন্ত দাস
[ আরও পড়ুন: কাটমানি ক্ষোভ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়েও, টাকা ফেরতের দাবিতে পোস্টার ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.