সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সকালে ফোন করে ১০ লক্ষ টাকা দাবি। না দিলে বোমা মারার হুমকি। শুক্রবার রাতে ঠিক তাই করল দুষ্কৃতীরা। তারপর ফের ফোন করে সতর্কবাণী, টাকা না দিলে এইভাবেই বোমা পড়বে। বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্র কার্জন গেটের অদূরে ছলদিঘি মোড়ে একটি প্রতিষ্ঠিত রেস্তরাঁয় এমন হামলার ঘটনা শোরগোল পড়েছে। বোমার স্প্লিন্টারের আঘাতে জখম হয়েছেন রেস্তরাঁর ছয়জন কর্মী। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। শনিবার ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
দিন পাঁচেক আগেও একই কায়দায় খাগড়াগড় ও কেষ্টপুরের মাঝে একটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকানে হামলা হয়েছিল। তবে সেখানে বোমাটি ফাটেনি। বোমা মারার আগে একই কায়দায় ফোনে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। পর পর এই ঘটনায় শহরের নিরাপত্তাও প্রশ্নের মুখে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রিয়ব্রত রায় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতের ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। আগের ঘটনার সঙ্গে এদিনের ঘটনার কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শহরের জিটি রোডের উপর ঢলদিঘি এলাকায় রয়েছে ওই রেস্তরাঁটি। শুক্রবার রাতে দোকান বন্ধের আগেই মালিক চলে গিয়েছিলেন। কর্মীরা দোকান বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রাত ১১টার পর আচমকা জিটি রোডের উপর থেকে দোকানের ভিতরে কেউ বোমা ছোঁড়ে। তাতে জখম হন ৬ কর্মী। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বিষয়টি দোকান মালিক রতন সোনকারকে জানান। দোকান মালিক জানান, ওইদিন দোকান খোলার পরেই তাঁর কাছে একটি ফোন এসেছিল। হিন্দিভাষী কেউ ফোন করে তাঁর কাছে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে। না দিলে দোকানে বোমা মারার হুমকিও দেয়। কেউ মজা করছে মনে করে বিষয়টি গুরুত্ব দেননি তাঁরা। রাতে ফের ফোন আসে। তখনও তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। বিষয়টি পুলিশকে জানাবেন কি না ভাবছেন সেই সময়ই দোকান থেকে তাঁকে ফোন করে জানানো হয় কেউ বোমা ছুঁড়েছে।
দোকানের ম্যানেজার অমর নাথ জানান, দোকানে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু তা দোকানের সামনের পার্কিং পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। তাঁদের অনুমান, জিটি রোডের উপর থেকে কেউ বোমা ছুঁড়েছে। তবে তাঁরা কাউকে দেখতে পাননি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজও পুলিশকে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গত সোমবার খাগড়াগড়ের কাছে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকানে হামলা হয়েছিল। দোকান মালিকের ছেলে সজল লায়েক পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তাঁকেও ফোন করে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়েছিল। তা না দেওয়ায় বোমা ছোঁড়া হয়। যদিও সেটি ফাটেনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.