ছবি: প্রতীকী
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: অনুব্রতর গড়ে ফের বোমা বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণে উড়ে গেল তৃণমুল পঞ্চায়েত সদস্যের ঘরের চালা। খয়রাশোল ব্লকের কাঁকরতলা গ্রামের বড়রা গ্রামের সদস্য শেখ মহিবুলের বাড়িতে শনিবার দুপুরে বিস্ফোরণটি ঘটে। তাতে দুটি ঘরের মাঝে থাকা এজবেস্টসের চালা উড়ে যায়। ফাটল দেখা যায় সদস্যের বাড়িতে। ঘটনায় আহত হন সদস্যের স্ত্রী আফিয়া বিবি।
তৃণমূলের জেলা সভাধিপতি ও খয়রাশোলের দায়িত্বে থাকা বিকাশ রায়চৌধুরি জানান, এটা বিরোধীদের চক্রান্ত। পাশেই ঝাড়খণ্ড। সেখান থেকে বিজেপির দুষ্কৃতীরা এসে অশান্তি সৃষ্টি করতে চাইছে। বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় বারুদের স্তূপের দাঁড়িয়ে আছে বীরভূম। এখন কর্মীদের বাড়িতে বোমা বেরচ্ছে। সঠিক তল্লাশি হলে নেতাদের বাড়ি থেকে গুলি, বোমা-বন্দুক বেরবে।’ জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং বলেন, একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সবদিক থেকে খতিয়ে দেখছে।
দিন তিনেক আগেই শর্তাধিন জামিনে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্য শেখ মহিবুল। তিনি এলাকায় শেখ কালো ওরফে আজফারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। কয়েকমাস আগে কালোর বাড়িতে রাত্রে বোমা গুলি-সহ আক্রমণ হয়। পাশাপাশি বড়রা তৃণমূল পার্টি অফিসে মজুত বোমা ফেটে সেটি ধ্বসে পরে।সে সব ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত শেখ কালো। তার সঙ্গী হিসাবে শেখ মহিবুল তিনদিন আগে বিস্ফোরণ কাণ্ডে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি এসেছিলেন। শনিবারেই বাড়িতে থাকা বোমা ফেটে উড়ে যায় নিজের বাড়ির একাংশ। মহিবুলের স্ত্রী আফিয়া বিবি জানান, দুপুরে বৃষ্টি শুরুর আগে বজ্রপাত শুরু হয়। তারই জেরে বোমা গুলি ফেটে যায় একসঙ্গে। সে সময় তিনি ঘরের ভিতরে ছিলেন। বিস্ফোরণে ঘরের একটি ভাঙা চাঙর এসে তার গায়ে লাগে। তিনি তাতেই জখম হন।
এদিকে বিস্ফোরণের জেরে কেঁপে ওঠে বড়রা গ্রামের ওই এলাকা। পরিস্থিতি বুঝে ওঠার আগেই এলাকা ছাড়া হয়ে যায় বাসিন্দারা। পরে কাঁকরতলা থানার পুলিশ ও শেখ হাসমত নামে এক যুবকের সহায়তায় স্থানীয় নাকরাকেন্দা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আফিয়াকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে একের পর এক বোমা বিস্ফোরণে খয়রাশোল এলাকা কেঁপে ওঠায় তাকে হাতিয়ার করতে চলেছে বিজেপি। শ্যামাপদ মণ্ডল জানান, সারা বীরভূম জুড়ে পুলিশি তল্লাশিতে বোমা বন্দুক উদ্ধার হচ্ছে তৃণমূলের ঘর থেকে। আর মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে স্থানীয় বিজেপি নেতাকে। তৃণমূল নেতা বিকাশ রায়চৌধুরি বলেন, ‘আমরা পুলিশকে বলেছি বহিরাগতরা কীভাবে বারেবারে বড়রা এলাকায় ঢূকে অশান্তি করছে তা খতিয়ে দেখতে। কারণ মিথ্যা অভিযোগে আমাদের কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা চালাচ্ছে বিজেপি।’
এদিকে পুলিশ ওই এলাকা থেকে প্রচুর বোমা উদ্ধার করলেও বিস্ফোরণ থামাতে পারেনি। তবে ঘটনার পর এলাকা পুরুষ শূন্য। চোখের সামনে ঘুটনা দেখলেও কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.