নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়। রীতি অনুযায়ী কালীপুজো করা বারণ। বাবার মার, বকুনির পরেও সেকথা কানে নেননি একগুঁয়ে অনুব্রত মণ্ডল। সকলের বাধাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ির সামনেই কালীপুজো শুরু করেন। নিজে হাতে তৈরি করেন প্রতিমা। বর্তমানে জেলে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। ‘কেষ্ট’হীন বোলপুরে এবার ওই পুজোর গুরুদায়িত্ব তাঁর ভাইয়ের কাঁধে।
গত ৫৫ বছর ধরে বাড়িপুকুর সম্মিলনীর কালীপুজো চলছে। এবারও প্রতিমা ৪৫ ফুট উচ্চতার। অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal) জেলে থাকায় এবার এই কালীপুজোর গুরুদায়িত্ব রয়েছে দাপুটে তৃণমূল নেতার ভাই প্রিয়ব্রতর কাঁধে। তিনি বলেন, “দাদা ছোটবেলায় পুজো শুরু করেছিল। ঘরের নিয়ম অনুযায়ী আমাদের কালীপুজো করতে নেই। তবুও এক প্রকার জেদ করে কালীপুজো করে। বাবার হাতে মারও খেতে হয়েছিল দাদাকে। ন’বছর বয়সেই কালীমূর্তিটা নিজেই তৈরি করেছিল দাদা। আজ দাদার পুজো সকল মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে৷” বোলপুর শহরে এই কালীপুজো এখন হয়ে উঠেছে ‘কেষ্টকালী’।
গত বছরও ঘটা করে বোলপুরে নিজের পাড়ার বাড়িপুকুর সম্মিলনীর কালীপুজোর উদ্বোধন করেন। ফিতে কেটে ও প্রদীপ জ্বালিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পুজোর উদ্বোধন করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তবে কালীভক্ত অনুব্রত এখন সিবিআইয়ের জালে। গত আগস্টের প্রথম সপ্তাহে গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের জালে ধরা পড়েন তিনি। বর্তমানে আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে রয়েছেন। অনেকেই বলছেন, এবার নিচুপট্টির ‘কেষ্ট’হীন কালীপুজোর জৌলুস নাকি কিছুটা কমছে। ক্লাব কর্তৃপক্ষের দাবি, অন্যান্য বছর যেমন কালীপুজো করা হয় সেরকমই আয়োজন করা হবে। আগের মতো পুজোর আয়োজন করবে বোলপুর বাড়িপুকুর সম্মিলনী ক্লাব। শুধু একটাই আফশোস, ‘কেষ্টদা’কে এবার কালীপুজোর রাতে পাড়ার ছেলেরা পাবে না।
এদিকে, বীরভূমের তৃণমূলের কার্যালয়ের কালীপুজোতেও প্রত্যক্ষ যোগ ছিল অনুব্রতর। ২০২০ সালে ৩০০ ভরি গয়না পরানো হয়েছিল কালীপ্রতিমাকে। তার পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে দেবীর গায়ে উঠেছিল ৫৭০ ভরি সোনার গয়না। মাকে নিজের হাতে গয়না পরাতেন অনুব্রতই। এবার কালীপ্রতিমা গায়ে কত ভরি সোনার গয়না ওঠে, তা নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.