প্রতীকী ছবি
অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: টিকিয়াপাড়ায় ঘর থেকে রহস্যজনকভাবে উদ্ধার হল মা ও মেয়ের মৃতদেহ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বিষক্রিয়া থেকে মা ও মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। দু’জনের দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে মা ও মেয়ে নিজেরা বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে না কি কেউ বিষ খাইয়ে দু’জনকে খুন করেছে, তা দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে জানার চেষ্টা করছে হাওড়া থানা।
টিকিয়াপাড়ার বসিরুদ্দিন মুন্সি লেনে একটি বহুতলের দোতলার ফ্ল্যাট থাকতেন মা আয়েশা খাতুন (৫৫) ও মেয়ে শারজাহা খাতুন (৩৫)। সোমবার দুপুরে আয়েশার এক মেয়ে ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখেন, ফ্ল্যাটের দরজা খোলা। তাঁর মা ও দিদি খাটে অচৈতন্য অবস্থায় শুয়ে রয়েছেন। তিনি আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকেন ও প্রতিবেশীদের ডাকেন। তাঁরাই খবর দেন পুলিশে। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, ওই ফ্ল্যাটে প্রচুর ইঁদুর রয়েছে। সেই ইঁদুরের জন্য ফ্ল্যাটের বিভিন্ন জায়গায় বিষাক্ত রাসায়নিক দেওয়া হয়। সেই রাসায়নিক খাবারে মিশে তা থেকেই দু’জনের মৃত্যু। এখন সেই খাবার তাঁরা নিজে থেকেই খেয়েছেন না কি কেউ খাবারে বিষ মিশিয়ে দু’জনকে খুন করেছে সেই রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। প্রতিবেশী ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আয়েশা খাতুনের চার মেয়ে ও এক ছেলে। চার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলেও শারজাহা স্বামী পরিত্যক্তা। তিনি মায়ের সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে মাঝে মাঝেই থাকতেন। তিন দিন আগে মায়ের কাছে এসেছিলেন তিনি। এদিন মা ও দিদিকে ফ্ল্যাটে দেখতে এসেছিলেন আয়েশার আরেক মেয়ে। মৃতদের এক প্রতিবেশী শ্যামা খান নামে এক মহিলা এদিন চাঞ্চল্যকর একটি তথ্য দেন। যাকে ঘিরে এই মৃত্যু নিয়ে আরও রহস্য দানা বেঁধেছে।
ওই মহিলা বলেন, ‘‘পরিবারটির টাকা পয়সার কোনও অভাব ছিল না। চার মেয়ে ও এক ছেলে। কিন্তু আয়েশার ছেলে ও তাঁর স্ত্রীরও ওই ফ্ল্যাটে একইভাবে শোয়া অবস্থায় দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই মৃত্যু রহস্যেরও তদন্তে নেমেছিল পুলিশ। এবার একইভাবে মা ও মেয়েরও মৃত্যু নিয়ে হতবাক আমরা। কী করে বার বার একই পরিবারে এভাবে মৃত্যু হচ্ছে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই মা ও মেয়ে মেলামেশা করতো। হঠাৎ কী কারণে দু’জনের মৃত্যু কিছুই বুঝতে পারছি না। দু’জনের মৃত্যুতে পুরো পরিবারটিই কার্যত শেষ হয়ে গেল।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.