ছবি: প্রতীকী
সৌরভ মাজি, বর্ধমান: অপহরণের (Kidnap) দেড় দিন পর শুক্রবার ভোর রাতে ঝোপের মধ্যে থেকে উদ্ধার হল বর্ধমানের তৃণমূল নেতার ছেলের হাত-পা বাঁধা দেহ। দেহটি উদ্ধারের পরই গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ মাঝি, মঙ্গলদীপ দলুই, জয়ন্ত বাগকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শুক্রবার সকালে ধৃতদের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। কার্যত ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় তিনজনের বাড়ি।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার রাতে। ওইদিন গ্রামের মনসাপুজোর প্রস্তুতি দেখতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল গলসি থানার সাঁকো গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য বুদ্ধদেব দলুই ৯ বছরের ছেলে। রাত সাড়ে ৮ টায় পরিবারের লোক বুঝতে পারেন, কিশোর বেপাত্তা। কিছুক্ষণ পরই অচেনা নম্বর থেকে বুদ্ধদেববাবুর কাছে ফোন যায়। জিজ্ঞেস করা হয়, ছেলের খোঁজ পেয়েছে কি না। এরপরই ফোন কেটে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর ফের ফোন করে জানানো হয়, ছেলেকে ফিরে পেতে চাইলে ৭ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এরপর বেশ কয়েকবার ফোন যায় বু্দ্ধদেববাবুর কাছে। তিনি জানান, “আমার কাছে টাকা দাবি করে। এত টাকা আমি কোথায় পাব, একথা বলি। জানাই, আমার কাছে কানাকড়িও নেই। তা শুনতে নারাজ ওরা। বলে পুলিশ বা সংবাদমাধ্যমকে জানালে ছেলেকে খুন করে দেবে। গালিগালাজও করতে থাকে আমায়।” কোথায় টাকা দিতে হবে পরে ফোন করে জানাবে বলে অপহরণকারীরা।
টাকা দেওয়া পেশায় খেতমজুর বুদ্ধদেববাবুর পক্ষে অসম্ভব ছিল। এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী মারফত ঘটনার খবর যায় পুলিশের কাছে। শুরু হয় তদন্ত। এরপরই শুক্রবার ভোরে গ্রামের বাইরের এক ঝোপে মেলে ওই নাবালকের দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, কিশোরকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে এখনও তাঁরা নিশ্চিত নন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মিলতেই গোটা বিষয় স্পষ্ট হবে। কিন্তু কী কারণে এই নৃশংসতা? রাজনৈতিক মতবিরোধ? টাকা আদায়ের চেষ্টা নাকি নেপথ্যে লুকিয়ে পুরনো শত্রুতা, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
ছবি: মুকুলেসুর রহমান
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.