সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এবার মহেশতলায়। ছেলের মৃতদেহ আগলে বসে রইলেন মা। খাওয়ালেন গ্লুকোজ। বিষয়টি টের পেতেই পুরপিতাকে খবর দেয় স্থানীয়রা। ইতিমধ্যেই দেহটি উদ্ধার করে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহেশতলা থানার অন্তর্গত মহেশতলা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের চককেন্দুয়ার একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন বকুল সেনগুপ্ত(৫৮) ও তাঁর পুত্র কৌশিক সেনগুপ্ত(৩৯)। বকুল সেনগুপ্ত আয়কর বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তবে স্বামী ও ছোটো ছেলের মৃ্ত্যুর পর থেকেই মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল তাঁর। এদিক নেশায় আসক্ত ছিলেন অপর ছেলে কৌশিক। কাজ কর্ম কিছুই করতেন না। নেশার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন কৌশিক। সেই কারণে ঘরেই থাকতো সে, এমনকি তার আধার বা ভোটার কার্ডও ছিল না। যার জেরে সম্প্রতি অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও ভরতি করানো যায়নি।
প্রতিবেশীদের দাবি, রবিবার সকাল থেকেই কৌশিকের কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। সেই কারণে সন্দেহ হয় সকলের। রাতে দশটা নাগাদ তাঁরা বকুলদেবীর বাড়িতে যান। দেখেন, বিছানায় শুয়ে কৌশিক। পাশে বসে বকুলদেবী তাঁকে জল ও গ্লুকোজ খাইয়ে দিচ্ছেন। এদিকে গাল বেয়ে পড়ে যাচ্ছে তা। এরপর পুরপিতাকে খবর দেওয়া হয়। তাঁর উদ্যোগেই সেনগুপ্ত বাড়িতে যান এক চিকিৎসক। তিনিই পরীক্ষা করে কৌশিককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি প্রথমে মানতেই চাননি বকুলদেবী। বারবার তিনি দাবি করেছেন, ছেলে ঘুমোচ্ছে।
সোমবার সকালে ১১ টা নাগাদ বকুলদেবীকে জানানো হয়, তার ছেলেকে মহেশতলা থানা এবং পুরোপিতার উদ্যোগে পাড়া-প্রতিবেশীরা সাহায্যে চিকিৎসার জন্য ঘরের বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরপর আকরা শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয় তাঁর। যদিও মায়ের বিশ্বাস, তাঁর ছেলেকে চিকিৎসার জন্যই পাড়ার লোকেরা চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছে। সমগ্র ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.