চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: শনিবার টিউশন পড়তে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী অমরপ্রীত কউর। সোমবার গভীর রাতে নিঁখোজ সেই ছাত্রীর অর্ধনগ্ন রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হল আসানসোলের আপকার গার্ডেন এলাকার একটি ডাস্টবিনের কাছ থেকে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই উত্তেজনা ছড়ায় আসানসোল চত্বরে। দেহ উদ্ধারের পরই তদন্তে গাফিলতি ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে ময়নাতদন্ত আটকে দেয় ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, গলার নলি ও হাতের শিরা কেটে খুন করা হয়েছে অমরপ্রীতকে।
জানা গিয়েছে, আসানসোল দক্ষিণ থানার ধেমোমেন কোলিয়ারির নিউ কলোনির বাসিন্দা অমরপ্রীত কাউর। ছাত্রীরা বাবা বলখার সিং ইসিএলের কর্মী। পরিবার সূত্রে খবর, শনিবার টিউশন পড়তে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সে। কিন্তু রাত হয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেনি অমরপ্রীত। এমনকী মোবাইল ফোনেও পাওয়া যাচ্ছিল না তাকে। সন্ধান না পেয়ে এদিন রাতে পরিবারের তরফে নিঁখোজ ডায়েরি করা হয় আসানসোল দক্ষিণ থানায়। এর মধ্যেই সোমবার দুপুরে ওই ছাত্রীর মোবাইল ফোন থেকে তার বাবা বলখারের মোবাইলে ফোনে একটি মেসেজ যায়। দাবি করা হয়, অমরপ্রীতকে অপহরণ করা হয়েছে। ১৫ লক্ষ টাকা দিলে তবেই তাকে মুক্তি দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে পুলিশকে জানালে অমরপ্রীতকে খুন করা হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় সেই মেসেজে।
সেই হুঁশিয়ারির পরোয়া না করেই পুলিশের কাছে গোটা ঘটনাটি জানান বলখার সিং। এরপরই সোমবার রাতে কিশোরীর দেহটি উদ্ধার হয়। দেহ উদ্ধারের পরই পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠাতেও পুলিশকে বাধা দেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের গাফিলতির জন্যই অমরপ্রীতকে বাঁচানো যায়নি। কারণ, অমরপ্রীত নিঁখোজ হওয়ার চারদিন পর্যন্ত পুলিশ তদন্তে সক্রিয় হয়নি। এমনকী অপহরণের মেসেজ পাওয়ার পরেও ফোনটি ট্র্যাক করে দেখা হয়নি পুলিশের তরফে।
স্থানীয়দের অনুমান, ওই ছাত্রীক ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। কারণ, অর্ধনগ্ন অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে তার দেহ। আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ সূত্রে খবর, দেহ ময়নাতদন্তে নিয়ে যেতে বাধা দিচ্ছে কিশোরীর পরিবার। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ পুলিশ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.