সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ট্রলিতে দেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্যভেদ করল পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, টাকার জন্যই কলকাতার বিবি গাঙুলি স্ট্রিটের বাসিন্দা ওই ব্যবসায়ীকে খুনের ছক কষে রাজু নামে এক দালাল। পরিকল্পনামাফিক ‘অপারেশন’ সেরে ওই ব্যবসায়ীর দেহ ট্রলিতে ভরে ট্রেনে তুলে দেয়! আদতেই কি টাকার জন্য খুন? নাকি ঘটনার পিছনে লুকিয়ে অন্য রহস্য ? তা জানতে অভিযুক্তের খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
কলকাতার বিবি গাঙুলি স্ট্রিটের বাসিন্দা হাসান আলি পেশায় ব্যবসায়ী। জানা গিয়েছে, ২১ লক্ষ টাকায় দিঘার একটি হোটেল লিজে নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। দালাল মারফত দিন সাতেক আগে হোটেল মালিককে ১৫ লক্ষ টাকাও দেন তিনি। এরপর বাকি ৬ লক্ষ টাকা নিয়ে রবিবার পাঁশকুড়ার উদ্দেশে রওনা হন হাসান। সেখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিমন্ত্রণ ছিল তাঁর। সোমবার সেই অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে বেরিয়ে দিঘা যাবেন বলে স্থির করেন হাসান। পরিকল্পনামাফিক আত্মীয়র বাড়ি থেকে বেরোনোর পর দিঘার রামনগরে রাজু নামে এক দালালের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। দীর্ঘক্ষণ তার সঙ্গে ছিলেন ওই ব্যবসায়ী। রাত ৯ টা নাগাদ ছেলেকে ফোনও করেছিলেন ওই ব্যবসায়ী। এরপর একাধিকবার পরিবারের তরফে তাঁকে ফোন করা হলে অপরিচিত এক ব্যক্তি ফোন ধরে কখনও জানিয়েছেন হাসান বাথরুমে, কখনও বলেছেন তিনি ব্যস্ত। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই বন্ধ তাঁর ফোন। কোনওভাবেই হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় মঙ্গলবার পাঁশকুড়া ও বউবাজার থানায় মিসিং ডায়েরি করে ওই ব্যবসায়ীর পরিবারের সদস্যরা। শুরু হয় তদন্ত।
এই পরিস্থিতিতে বুধবার সকালে মেচেদায় কারশেডে থাকা একটি ট্রেন থেকে ট্রলিতে মেলে ওই ব্যক্তির দেহ। তদন্তে নেমেই মৃতের পরিচয় জানতে পারেন তদন্তকারীরা। মৃতের এক আত্মীয় জানান, হাসান আলির এই হোটেল লিজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন ৪ জন দালাল। তাঁদের মধ্যে একজনের নাম রাজু। সোমবার রাতে তাঁরা এসঙ্গে ছিলেন বলেই জানান তিনি। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন যে, মৃতের ফোনটি সুইচ অফ হওয়ার আগে পর্যন্ত রাজু ও তাঁর টাওয়ার লোকেশন একই ছিল। অর্থাৎ পুলিশ নিশ্চিত তারা একসঙ্গে ছিলেন। যে হোটেলটি হাসানে লিজে নেওয়ার কথা ছিল তার মালিকের সঙ্গে কথা বলা হলে জানা যায় এখনও পর্যন্ত কোনও টাকাই পাননি তিনি। এরপরই তদন্তকারীদের কাছে অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যায় গোটা ঘটনা। তদন্তকারীরা কার্যত নিশ্চিত যে, টাকার জন্য হাসানকে খুন করেছে রাজু। কিন্তু একাই খুন করে ট্রলিতে ভরে দেহ ট্রেনে তুলে দিল রাজু? নাকি এর পিছনে যোগ রয়েছে দালাল চক্রের বাকি তিনজনেরও? এখন এই প্রশ্নের উত্তর হাতরাচ্ছে পুলিশ। রাজুর হদিশ পেলেই গোটা বিষয়টি স্পষ্ট হবে, এমনটা জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.