Advertisement
Advertisement

Breaking News

লঞ্চেই নিরাপদ বেলুড় থেকে দক্ষিণেশ্বর ভ্রমণ, বন্ধ হয়ে গেল নৌকা

দেড়শো বছরের নৌকা সফর এখন অতীত।

Boat services from Belur Math to Dakshineswar stopped
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:October 17, 2018 3:49 pm
  • Updated:October 17, 2018 3:49 pm  

সুব্রত বিশ্বাস: ‘এই নৌকায় রানি রাসমণি চড়েছিলেন। আমার ঠাকুরদা তখন নৌকাটা চালাতেন।’ বেশ কয়েক বছর আগে বেলুড়মঠ থেকে দক্ষিণেশ্বর যাওয়ার পথে নৌকার মাঝি রামপলট চৌধুরি বেশ গর্বের সঙ্গে জানিয়েছিলেন এই কথা। তবে দাঁড় টানার পদ্ধতি বদলে গিয়েছিল ১৯৭৯ সালেই। এখন তা সাবেকি ভুটভুটি নামেই চলছিল। বেলুড়মঠ-দক্ষিণেশ্বরের দেড়শো বছরের এই নৌকা সফর এখন অতীত। পুজোর আগে এই নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেল স্থায়ীভাবে। রাজ্য ভূতল পরিবহণ লঞ্চ সার্ভিস চালু করায় বন্ধ হয়ে গেল এই নৌকা। ৪২টি নৌকা চলাচল করত ওই জলপথে। শনিবার তা বন্ধ হওয়ার পর নৌকাগুলির বেশিরভাগই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এখন উদ্বৃত্ত তিনটি নৌকা ঘাটের অদূরে চলে যাওয়ার আশায় দিন গুনছে।

[পুজোর অনুমতি পাইয়ে দিয়েই উপার্জন! অভিনব পেশায় সংসার চালান এই বৃদ্ধ]

দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে ওই পথে দাঁড় টানা নৌকা চলত। এক সময় এই নৌকা এতটাই জনপ্রিয় ছিল যে, প্রথমে ১৭টি চললেও পরে সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২২টিতে। পরে ৩০। গত সাত বছরে সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ৪২-এ। মাঝি-দাঁড়ি মিলিয়ে ৮৪ জনের পরিবার নির্ভরশীল ছিল নৌকাতেই। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা, প্রাণহানির আশঙ্কাতে বেশ কয়েক মাস আগে বেলুড়-দক্ষিণেশ্বরের মাঝে লঞ্চ সার্ভিস চালু করে রাজ্য পরিবহণ। নিয়মিত পর্যায়ে এই পরিষেবা আনতে সাময়িক বিপত্তি দেখা দেয়। নৌকার উপর নির্ভরশীলরা বেকার হয়ে যাবেন। সরকার তৎপর হয় নৌকার মালিকদের পরিবারের একজনকে জলধারা জলসাথী প্রকল্পে মাসিক দশ হাজারের চুক্তিতে চাকরি দেওয়ার। সেইমতো নৌকার মালিকদের তালিকা জমা নেওয়া হয়।

Advertisement

[ফের ইসিএলের কর্মী আবাসনে চুরি, খোয়া গেল লক্ষাধিক টাকার সামগ্রী]

১৩ অক্টোবর সেইমতো অনেকেই কাজে যোগ দেন। তবে অনেকেই এই চাকরিতে যোগ না দেওয়ায় বেকার থেকে গিয়েছেন। সম্প্রতি রাজ্য পরিবহণ দপ্তর নৌকার মালিকদের এই নৌকা পরিষেবা বন্ধের জন্য নোটিস দেয়। এরপরেই শনিবার সকাল থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেল বেলুড়মঠ-দক্ষিণেশ্বরের মাঝে নৌকা চলাচল। পুজো ও শীতের মরশুমে দিনভর যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড় হত এই নৌকায়। নৌকার মালিকরা জানিয়েছেন, একেক জনের কম করে মাসিক আয় ছিল ২৫ হাজার টাকার উপর। এরপর নানা মরশুমে তা আরও বাড়ত। তবে লঞ্চ পরিষেবা ঝুঁকিহীন হওয়ায় তা জনপ্রিয় হয়েছে। রোজ সকাল আটটা থেকে সন্ধে সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত চলছে। আধ ঘণ্টা অন্তর এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চৈতালি বিশ্বাস জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে মানুষজন সাধুবাদ জানিয়েছেন। নৌকায় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটত। লঞ্চ চলাচলে তা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। কম সময়ে স্বাচ্ছন্দের যাত্রা উপভোগ করছেন পর্যটকরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement