সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাঁচাতে এবার বাম শ্রমিক সংগঠনের সুর আরএসএসের গলায়। যেন পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে শোষিত শ্রেণির প্রতিবাদ। দেশের সম্পত্তি পুঁজিপতিদের হাতে চলে যাচ্ছে। এই অভিযোগ তুলে তার বিরোধিতায় দিল্লিতে সর্বভারতীয় স্তরে সম্মেলনের ডাক দিল আরএসএসের শ্রমিক সংগঠন বিএমএস। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ, বিলগ্নীকরণ, কৌশলগত বিক্রি ও ব্যাংকের সংযুক্তিকরণ নিয়ে আগামী ১৯ ডিসেম্বর নিউ দিল্লির মাভালাঙ্কার হলে বিএমএসের এই সম্মেলন ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে।
বিএমএসের ‘রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প সমন্বয় কমিটি’ উদ্যোগে এই সম্মেলনের মুল স্লোগানই হলো – ‘রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাঁচাও ও দেশ বাঁচাও’। কেন্দ্রীয় সরকারের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা নিয়ে নীতির সমালোচনা ও বিরোধিতা করেই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। দেশের বহু রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প সংস্থা হয় বন্ধের পথে, নয়ত বেসরকারিকরণের পথে হাঁটছে কেন্দ্র। কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সংযুক্তিকরণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে এই সম্মেলন থেকেই পরবর্তী আন্দোলনের পরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
১৯ তারিখের সম্মেলনে দেশের কয়লা, ব্যাংক, ইস্পাত শিল্প-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে বিএমএসের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত থাকবেন এই সম্মেলনে। বিএমএসের সর্বভারতীয় স্টিল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি অরূপ রায় জানান, “রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না। পুঁজিবাদের হাতে চলে যাবে দেশের সম্পত্তি। এই নীতির বিরুদ্ধে এই সম্মেলনের পরই পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করা হবে। আমরা সর্বাত্মকভাবে এই নীতির বিরোধিতা করব।”
এদিকে, বিএমএসের এই সম্মেলনকে কটাক্ষ করে সিটুর রাজ্য সম্পাদক অনাদি সাহু বলেন, “কেন্দ্রের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে যৌথ লড়াইতে আগে আমাদের সঙ্গে বিএমএসও ছিল। কিন্তু কেন্দ্রে যেদিন থেকে বিজেপি সরকার আসে, সেদিন থেকেই ওরা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াই থেকে সরে যায়। এখন নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামছে। নতুন করে কিছু করছে না। শ্রমিকদের মন পেতেই আমাদের ভাষা ধার করে চালাতে হচ্ছে। তবে দেরিতে বোধোদয় হলেও, এই কর্মসূচি শ্রমিক ও দেশের পক্ষে ভালো।” বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিএমএসের এই কর্মসূচি নিয়ে জানিয়েছেন, “বিএমএস একটি স্বতন্ত্র সংগঠন। কেন্দ্রের কোনও নীতি যদি তাদের শ্রমিক বিরোধী মনে হয়, তাহলে তারা আন্দোলন করতেই পারে। এর আগেও করেছে। এই নিয়ে বিজেপির সঙ্গে বিএমএসের কোনও মতবিরোধ হবে না।”
ছবি: উদয়ন গুহরায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.