নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বীরভূম গোঁসাইপুর পাথর খাদানে প্রবল বিস্ফোরণে মৃত্যু হল হল কমপক্ষে তিন শ্রমিকের৷ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে বলে সূত্রে সূত্রে খবর৷ এদিনের এই দুর্ঘটনায় দু’জন শ্রমিক গুরুতর জখম হয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে৷ বৃহস্পতিবার সকালের এই দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে খাদান শ্রমিকদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেসিবি মেশিন দিয়ে পাথর সরানোর সময় খাদানে বিস্ফোরণ ঘটে যায়৷ খাদান শ্রমিকদের দাবি, খাদানের মধ্যে বেআইনি ভাবে মাটিতে বিস্ফোরক মজুত রাখার জেরেই ঘটে বিপত্তি৷ খাদানের কাজ চলাকালীন আচমকা বিস্ফোরণ ঘটনায় বড়সড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷
হতাহতের সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হলেও এলাকা ঘিরে রেখেছে আদিবাসী ও খাদান মালিক কর্তৃপক্ষ৷ অভিযোগ, মৃত্যুর সঠিক কারণ ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিলেও এখনও পর্যন্ত দুটি ঝলসানো দেহ রামপুরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর৷ জানা গিয়েছে, মৃত দুই শ্রমিকের নাম নরেশ ঘোষ৷ বাড়ি মহম্মদবাজারের শিয়ানবাধাষ। অপরজন তারক রায়, বাড়ি ডেউচা৷ মালিক ও স্থানীয়দের দাবি, বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয়েছে তাদের৷ এর সঙ্গে বিস্ফোরণের কোনও যোগ নেই৷ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলের পৌঁছে গিয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী৷তবে, ঠিক কী কারণে এই দুর্ঘটনা, আদৌও খাদানটির কোনও বৈধতা ছিল কি না তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি৷ অনুমান করা হচ্ছে, বেআইনি কাজের জেরেই এই দুর্ঘটনা৷
বীরভূমের একমাত্র শিল্প পাথর খাদান গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশে পুরোপুরি বন্ধ৷ বীরভূমের ২১৭টি পাথর খাদান, পাঁচামি, তালবাঁধ, শালবাদরা, বড়পাহারি, নলহাটি ও রাজগ্রাম এলাকায় অবস্থিত৷ জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশে এই ২০৭টি পাথর খাদান বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন৷ কিন্তু, ঝাড়খণ্ডে এখনও রমরমিয়ে চলছে খাদান ব্যবসা৷ মনে করা হচ্ছে, পাথর খাদান নিয়ে ঝাড়খণ্ড সরকারের উদাসীনতার জেরেই এদিনের এই ঘটনা৷ প্রশ্ন উঠছে, পশ্চিববঙ্গে বেআইনি খাদান বন্ধ করা গেলেও কেন পারল না ঝাড়খণ্ড সরকার৷ কেন এড়ানো গেলে না শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.