রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাইভোল্টেজ সভার আগে পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে বোমা বিস্ফোরণ। উড়ল তৃণমূল বুথ সভাপতির বাড়ি। প্রাণ গিয়েছে তৃণমূল নেতা-সহ তিনজনের। বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে তৃণমূল বুথ সভাপতি এবং আধ কিলোমিটার দূরে উদ্ধার আরেকজনের দেহ। ঘটনাস্থল থেকে দূরে দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে। বোমা বিস্ফোরণের তীব্রতা নাকি অন্য কোনও কারণে মৃত্যু হল ওই তিনজনের, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শুক্রবার ঘড়ির কাঁটায় রাত সাড়ে ১০টা। তীব্র বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ২ নম্বর ব্লকের ভূপতিনগর থানার অর্জুননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাড়ুয়াবিলা। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে তৃণমূল বুথ সভাপতির ঝলসানো দেহ উদ্ধার হয়। আধ কিলোমিটার দূরে মেলে আরেকজনের দেহ। মৃতরা হলেন রাজকুমার মান্না, দেবকুমার মান্না ও বিশ্বজিৎ গায়েন। রাজকুমার মান্না এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি হিসেবে পরিচিত। রাজকুমার ও দেবকুমার সম্পর্কে দুই ভাই। এই ঘটনায় আহত হন বেশ কয়েকজন। তাঁদের উদ্ধার করে পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।
ঘটনার জেরে শনিবার সকালেও এলাকার পরিবেশ যথেষ্ট থমথমে। অভিষেকের সভার আগে বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির অভিযোগ, ভূপতিনগরে তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়িতে বোম বাঁধার কাজ করছিল। তখনই অতর্কিতে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের মাত্রা এতটাই তীব্র ছিল যে বাড়িটি উড়ে যায়। মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতা রাজকুমার মান্না-সহ তিনজনের। বিজেপির কাঁথির সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার দোলুইয়ের দাবি, ‘‘তৃণমূল নেতার বাড়িতে বোম বাঁধতে গিয়ে বিপত্তি৷ তৃণমূল নেতা-সহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।’’
ভগবানপুরের বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা রবীন্দ্রনাথ মাইতির গলাতেও একই সুর। তিনি বলেন, “রাতে বোমা বাঁধা হচ্ছিল তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্নার বাড়িতে। তখনই বিষ্ফোরণ হয়। বেশ কয়েকজনের মৃত্যু ঘটেছে। রাজকুমারের মৃতদেহ রাতেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজকুমারের মা গুরুতর আহত। ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে জানাগেছে। লালু মান্না বলে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ নিরপেক্ষ নয়। পুলিশ নিরপেক্ষ হলে আজকে এমন ঘটনা ঘটতো না। আমরা এনআইএ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।”
যদিও বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে বিজেপি তাণ্ডব চালিয়েছে। তৃণমূলের কর্মীদের উপর হামলা করা হয়েছে। মিহির ভৌমিককে বন্দুকের বাঁট দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিষেকের সভা থেকে নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে যারা ঘুরছে, তারাই বোমা সরবরাহ করছে। এনআইএ চেয়ে তৃণমূলের লোকেদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। এটা বিজেপির পরিকল্পিত প্লট।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.