সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের দিন নজিরবিহীন ছবি দেখেছিল রাজ্য। ভোটের দিন প্রকাশ্যে লাথি খেলেন বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদার। যা সাম্প্রতিক অতীতে অন্তত বাংলার রাজনীতিতে দেখা যায়নি। যে এলাকায় জয়প্রকাশবাবু লাথি খেলেন সেটি করিমপুর ২ নম্বর ব্লকের ঘিয়াঘাট গ্রাম। বিজেপি প্রার্থীর অভিযোগ ছিল, “ওই গোটা এলাকাতেই তৃণমূলী গুণ্ডারা দাপাদাপি করছে। তিনি এলাকায় ঢুকতে গেলে তাঁকে বলা হয়, এটা তৃণমূলের এলাকা, এখানে বিজেপির লোক ঢুকতে পারবে না।” জয়প্রকাশবাবুর সেই অভিযোগ সত্য কিনা, তা বিচারসাপেক্ষ। কিন্তু, ভোটের ফলাফল বলছে ওই এলাকাটি সত্যিই তৃণমূল কংগ্রেসের।
ওই এলাকার ভোটের ফল বুঝতে হলে আগে জানতে হবে স্থানীয় রাজনীতি। করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্রটি দুটি ব্লকে বিভক্ত। করিমপুর এক নম্বর ব্লকে হিন্দু ভোটার তুলনায় বেশি। করিমপুর ২ নম্বর ব্লক বেশিরভাগটাই মুসলিম অধ্যূষিত। ভোটপ্রচারের সময় জয়প্রকাশবাবুকে করিমপুর ২ নম্বর ব্লকে খুব একটা দেখা যায়নি। তিনি নিজের প্রচার মূলত সেরেছেন ১ নম্বরে। আবার তৃণমূলপ্রার্থী জোর দিয়েছিলেন দুই নম্বরে। প্রত্যাশা করা হচ্ছিল, ভোটের দিনও জয়প্রকাশবাবু ১ নম্বর ব্লকে এবং তৃণমূল প্রার্থী বিমলেন্দু সিংহরায় ২ নম্বর ব্লকে থাকবেন। কিন্তু, হল ঠিক তার উলটোটা। নিজেদের শক্তিশালী জায়গাগুলিতে না ঘুরে দুই দলের প্রার্থীই ঘুরলেন নিজেদের দুর্বল জায়গাগুলিতে। ঘিয়াঘাট, সাহেবপাড়ার মতো সংখ্যালঘু এলাকাগুলিতে ঘুরতে দেখা গেল জয়প্রকাশবাবুকে। আর সেই এলাকাগুলিতেই আক্রান্ত হলেন তিনি। দিনভর তাঁকে দেখা গেল সংবাদের শিরোনামে।
কিন্তু, সংবাদের শিরোনামে এসে ভোটের বাক্সে জয়প্রকাশবাবু ফায়দা পেলেন কি? ফলাফল বলছে, একেবারেই না। যে বুথে জয়প্রকাশবাবু মার খেলেন, সেই ঘিয়াঘাটের ৩২ নম্বর বুথে বিজেপি পেয়েছে মাত্র ২টি ভোট। তৃণমূল সেখানে পেয়েছে ৭০৭টি ভোট। পার্শ্ববর্তী ৩৩ নম্বর বুথে বিজেপি ভোট পেয়েছে মাত্র ৩৮টি। তৃণমূল পেয়েছে ৬৩৪টি ভোট। শুধু তাই নয়, সামগ্রিকভাবে করিমপুর ২ নম্বর বুথেই প্রায় ২৭ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিলেন জয়প্রকাশ। চূড়ান্ত ফলপ্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে তিনি ২৪ হাজার ১১৯টি ভোটে পরাজিত হয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.