শেখর চন্দ্র, আসানসোল: প্রার্থীর নাম নেই। তাই প্রচারও নেই। তবে আসানসোলে বিজেপির মরা গাঙে পালে একা হাওয়া তুলছেন প্রাক্তন মেয়র বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি (Jitendra Tiwari)। আসানসোলের ৭ টি বিধানসভা জুড়ে জনসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন তিনি। প্রতিদিন বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দিচ্ছেন তিনি। মর্নিং ওয়াকেও চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার। আবার সোশাল মিডিয়া জুড়ে ঘুরছে পোস্টার। “ইচ্ছে সবার, জিতেন এবার”। যদি জিতেন্দ্র তেওয়ারির দাবি বিজেপির প্রত্যেকটি আসনেই প্রার্থী নরেন্দ্র মোদি। প্রার্থী আজ না হয় কাল ঘোষণা হবেই। যিনিই আসুক না কেন তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হবেনই। তার কটাক্ষ তৃণমূল তো দেশের মধ্যে সবার প্রথম শত্রুঘ্ন সিনহার নাম ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু নাম ঘোষণায় সার। প্রার্থী তো এখনও প্রচারেই নামতে পারলেন না। বিজেপি কর্মীরা জনসংযোগে আছেন।
এদিকে তৃণমূল (TMC) ও সিপিএম প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়ে গেছে আগেই। এই অবস্থায় বিজেপি নেতা কর্মীদের অবস্থা আরও তথৈবচ। কে হবেন প্রার্থী? বিহারীবাবুকে টেক্কা দেবেন কোনও বহিরাগত সেলিব্রিটি নাকি, স্থানীয় বিজেপি নেতা? সিদ্ধান্ত নিতে কেন এতো বিলম্ব? রাজনৈতিক মহলের মতে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত পদ্ম শিবির। একদিকে অগ্নিমিত্রা পল অন্যদিকে কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় আবার রয়েছেন জিতেন্দ্র তেওয়ারিও। তার সঙ্গে রয়েছে আদি বিজেপি নেতা কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত। কিন্তু প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাদের মতামত গেছে একে অপরের বিরুদ্ধে। ফলে বিভ্রান্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক তথা রাজ্য সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পলকে ইতিমধ্যে প্রার্থী করা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। তিনি এখন আসানসোল ছেড়ে পাড়ি দিয়েছেন সেখানে। আসানসোল বিজেপির অন্যতম নেতা রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি এখন বসিরহাটের কনভেনারের দায়িত্বে। ফলে গত দু মাস ধরে তিনি পড়ে রয়েছেন সেখানে। আসানসোলে কোনও পরিচিত বিজেপি নেতার দেখা নেই। কোনও দলীয় কর্মসূচিও নেই। তাই কর্মীদের মনে কোনও উৎসাহ নেই। তবে অনেকেই সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে চাইছেন জিতেন্দ্র কেন প্রার্থী নয়?
অনুগামীদের দাবি, শহরের প্রাক্তন মেয়র ছিলেন। ছিলেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক। ছিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি। আসানসোল লোকসভার পরিচিত মুখ। হিন্দিভাষী হলেও বাংলা হিন্দি দুটি ভাষাতেই সাবলীল। শহরের সমস্যা সম্পর্কে তিনি অবহিত। প্রার্থী হিসেবে তাকে আলাদা করে পরিচয় করানোর প্রয়োজন নেই। বহিরাগত বা বাহারিবাবু শত্রুঘ্ন সিনহার মোকাবিলায় ভূমিপুত্র হিসাবে এগিয়ে থাকতে পারে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে ভোটবাজারে, চুপচাপ বসে না থেকে জিতেন্দ্রও অবশ্য প্রচার শুরু করেছেন। তবে অন্যভাবে। একমাত্র ময়দানে নেমেছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি৷ তাঁর নিজের উদ্যোগে প্রতিদিন জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই ভাবছেন প্রার্থী হওয়ার লড়াইয়ে এখনও চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, “দলের যেমন নির্দেশ আসছে, সেই অনুযায়ী কর্মসূচি করা হচ্ছে। দেওয়াল বুকিংও হয়ে গিয়েছে। প্রার্থীর জন্য শুধু অপেক্ষা। সেন্ট্রাল পার্টি অফিসে নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন হয়েছে। কর্মীরা প্রস্তুত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.