বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: দেরিতে হলেও হুঁশ ফিরেছে বাম-কংগ্রেস জোটের! সমতলে গ্রামীণ এলাকায় চলে যাওয়া ঘরের ভোট ফেরাতে মরিয়া চেষ্টা শুরু করেছে তারা। আর তাতেই দার্জিলিং লোকসভা আসনে ঘিরে গেরুয়া শিবিরে স্নায়ুচাপ বাড়ছে। যে সমস্ত বুথ এলাকা দখল করে বিজেপি ২০১৯ নির্বাচনে ভোট বাড়িয়েছে সেখানেই প্রচারে জোর দিয়েছে জোট।
দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অধীন সমতলে রয়েছে মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি, শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া এবং চোপড়া বিধানসভা কেন্দ্র। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও সিপিএমকে দুরমুশ করে মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি, শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া আসন দখলে নেয় বিজেপি। তার আগে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনেও বাম ও কংগ্রেস শিবিরের ভোট চলে যায় পদ্ম শিবিরে। যেমন, গত বিধানসভা নির্বাচনে ৫৮.০১ শতাংশ ভোট পেয়ে মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি আসন দখলে নেয় বিজেপি। কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ছিল মাত্র ৯ শতাংশ। অথচ ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী ৪১.২১ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাম-কংগ্রেস জোট নেতৃত্ব জানান, ভুল বুঝে আবেগে তাদের যে সমর্থকরা ২০১৯ লোকসভা এবং ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন তাদের ভোট ঘরে ফেরানোর লড়াই চলছে।
দার্জিলিং জেলা সিপিএম সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, “এবার যেন আগের দুই নির্বাচনের পরিস্থিতি না-হয় সেজন্য জোট নেতৃত্ব মাটি কামড়ে তৃণমূল স্তরে প্রচার শুরু করেছেন। চলে যাওয়া ভোট ঘরে ফেরানোই লক্ষ্য আমাদের।” জোট সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোট ফেরাতে তারা কৌশল নিয়েছেন ব্লক ধরে বুথ এলাকায় জনসংযোগ। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে মাটিগাড়া, নকশালবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া ও খড়িবাড়ি চারটি ব্লক রয়েছে। এখানে আছে ৫৬৫টি বুথ। মহকুমা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা সিপিএম নেতা তাপস সরকার জানান, প্রতিটি বুথে ছয়জন জোট কর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওরা এলাকায় ঘুরছেন, কথা বলছেন। ভালো সাড়া মিলছে। দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জীবন মজুমদার বলেন, “হাতে সময় কম। প্রার্থীকে সব বুথ এলাকায় নিয়ে পৌঁছনো সম্ভব হবে কিনা জানি না। তবে জোট নেতৃত্ব প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোট ফিরবে। মানুষ সাড়া দিচ্ছে।”
এদিকে জোট নেতৃত্বের তৎপরতা বাড়তে গেরুয়া শিবিরে উদ্বেগ বেড়েছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বাম-কংগ্রেস জোট যত ভোট কাটবে ততই পিছিয়ে পড়তে হবে বিজেপিকে। তৃণমূলের খুব একটা সমস্যা হবে না। তবে মুখে স্বীকার না-করলেও বিজেপি নেতৃত্ব সংগঠন ধরে রাখতে বুথ নেতৃত্বকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সভার বক্তব্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ছোট ছোট সভার উপরে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বলেন, “তেমন কোনও সমস্যা নেই। বাম-কংগ্রেস জোট নামেই। গ্রামাঞ্চলে ওদের অস্তিত্ব নেই। তাই নির্বাচনে এসবের কোনও প্রভাব পড়বে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.