সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: নানুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াইয়ের দেহ নিয়ে সোমবার দিনভর টানাপোড়েন চলল কলকাতায়। রাতে বিজেপি কর্মীর দেহ নিয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী রওনা দেয় নানুরের উদ্দেশ্যে। যদিও সেই সময় পরিবারের সদস্য ও বিজেপি নেতৃত্ব ছিলেন না। বিজেপি কর্মীর শববাহী গাড়ির সঙ্গে ছিল কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের ২২টি গাড়ির কনভয়। বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেন, “পরিবারের লোককে না জানিয়ে রাতের অন্ধকারে পুলিশ দেহ নিয়ে গিয়েছে। আমরা আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছি।”
এদিকে, এনআরএস হাসপাতালের মর্গ থেকে দেহ নিয়ে সোজা রাজ্য বিজেপি অফিসে যেতে চেয়েছিলেন স্বরূপের স্ত্রী ও ভাই। কিন্তু পুলিশ সেই আরজি খারিজ করে দেহ নানুরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিতেই পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে। বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরি ও যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ সরকারের নেতৃত্বে দলীয় কর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। স্বরূপের পরিবারও পুলিশের এই নিষেধাজ্ঞার তীব্র বিরোধিতা করে। দেবজিৎ সরকার জানিয়েছেন, মৃতদেহ পরিবারের হাতে দেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ কেন শর্ত চাপাবে তার প্রতিকার চেয়ে মঙ্গলবার হাই কোর্টে আবেদন জানানো হবে। আদালতের নির্দেশ মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে স্বরূপ গড়াই খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা সকলেই তৃণমূলকর্মী বলে পরিচিত। কিন্তু ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বীরভূম জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ করিম খানের গ্রেপ্তারের দাবিতে এদিন জেলাজুড়ে বিক্ষোভে শামিল হন বিজেপি কর্মীরা। সিউড়িতে এসপি অফিসের সামনে এবং নানুর থানাতেও লাগাতার বিক্ষোভ চলে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন।
শুক্রবার রাতে রামকৃষ্ণপুরে গুলিবিদ্ধ হওয়া স্বরূপের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় পার্ক সার্কাসের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানেই রবিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিন এনআরএস হাসপাতালের মর্গে স্বরূপের দেহ নিতে আসেন তাঁর স্ত্রী চায়না গড়াই ও ভাই অরূপ গড়াই। দেহ হস্তান্তর নিয়ে পুলিশ গোড়া থেকেই টালবাহানা করে বলে অভিযোগ। স্বরূপের শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর দেহ রাজ্য বিজেপি দপ্তরে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন চায়নাদেবী। মর্গ চত্বরে পুলিশবাহিনী মোতায়েন ছিল। বিজেপি দপ্তরে দেহ নিয়ে যাওয়ার অনুমতি সাফ খারিজ করায় পুলিশের সঙ্গে স্বরূপের পরিবার ও বিজেপি নেতাদের বচসা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংয়ের গাড়ি পুলিশ অফিসে ঢোকার সময় ‘হায়, হায়’ স্লোগানে সরব হন বিজেপি কর্মীরা। জেলা বিজেপি সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল জানান, যতদিন করিম গ্রেপ্তার না হচ্ছেন, ততদিন বেলা ১১ টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পুলিশ সুপারের দপ্তরের সামনে অবস্থান চলবে।তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ রাণা সিংহ জানিয়েছেন, “এটা বিজেপির দলীয় কোন্দল। তৃণমূলকে জড়িয়ে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.