রাজা দাস, বালুরঘাট: যেখানে দেওয়াল জুড়ে থাকার কথা প্রার্থীর নাম। সেখানে দেওয়াল জুড়ে কালির ছাপ। কোথাও প্রার্থীর নামের উপর কালি। কোনও দেওয়ালে হয়তো পদ্মফুল রয়ে গিয়েছে। কোথাও আবার দলীয় প্রতীকও ঢাকা পড়েছে কালিতে। নির্বাচনের আগে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বিভিন্ন এলাকার ছবিটা এমনই। আর কারণ হিসেবে উঠে এসেছে প্রার্থী বাছাইয়ে অসন্তোষ।
বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বেশ কিছু জায়গায় দলের অন্দরের অসন্তোষ প্রকাশ্যে এসছে। কোথাও প্রার্থী না পসন্দ হওয়ায় সরব হয়েছেন স্থানীয়রা। কোথাও আবার প্রার্থী না হতে পেরে দল ছেড়েছেন পোড়খাওয়া নেতা। ছবিটা একই বালুরঘাটেও। তবে পদ্ধতিটা ভিন্ন। বিক্ষোভ আন্দোলন নয়, এলাকায় বিভিন্ন দেওয়ালে যেখানে আগেই পদ্মফুলের ছবি আঁকা হয়ে গিয়েছিল। সেই সব দেওয়ালে এখন কালি। কারণ, প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ। জানা গিয়েছে, বালুরঘাট আসনের প্রার্থী হওয়ার বাসনায় আবেদন করেছিলেন বিজেপির বহু নেতা। সূত্রের খবর, প্রার্থী হওয়ার আশা ছিল খোদ দলের জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকার ও উত্তরবঙ্গের পর্যবেক্ষক রবীন্দ্রনাথ বোসেরও। কখনও কানাঘুষো উঠে এসেছিল রাজ্য সাধারণ সম্পাদিকা দেবশ্রী চৌধুরি, জেলার সাধারণ সম্পাদক মানস সরকার ও নীলাঞ্জন রায়ের নাম। এমনকি মুকুল রায়ের নাম নিয়েও চলে জল্পনা। কেউ কেউ আবার প্রার্থী পদ নিয়ে এতটাই নিশ্চিত ছিলেন যে দেওয়াল লিখনও সেরে ফেলেছিলেন। শুরু করেছিলেন প্রচার। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার, হোর্ডিং-এ ভরে গিয়েছিলেন।
তবে বিজেপি প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করার পরেই শুরু হয় কোন্দল। বালুরঘাট আসনে সুকান্ত মজুমদারের নাম ঘোষণার পর থেকে অসন্তোষ তৈরি হয় স্থানীয় নেতা কর্মীদের মধ্যে। এরপরই এলাকায় পদ্মশিবিরের দখলে যে দেওয়াল ছিল, কালি দিয়ে মুঝে দেওয়া হয়েছে তাঁর প্রতীক। এভাবে কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও দেওয়ালে নতুন নাম লেখা হয়নি।
এ বিষয়ে নেতা কর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, বালুরঘাট আসনটিতে বিজেপির জয় নিশ্চিত ছিল। শুধুমাত্র এলাকার কেউ অথবা হেভিওয়েট প্রার্থীকে দাঁড় করানো প্রয়োজন ছিল। তাঁদের অভিযোগ, সুকান্ত মজুমদার আরএসএস-এর লোক। বিজেপি দলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগই ছিল না কোনও দিন। তাঁকে প্রার্থী করে উলটে জেনে বুঝে এই আসনটি তৃণমূলকে উপহার দেওয়া হল। তবে বিজেপি জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকারের কথায় অন্য সুর, তিনি বলেন, যাঁদের নাম জেলা থেকে পাঠানো হয়েছিল তাঁদের চাইতে অনেক গুণসম্পন্ন ব্যক্তিকে প্রার্থী করেছে দল। তিনি জানিয়েছেন, কর্মীদের মধ্যে সুকান্ত মজুমদারকে নিয়ে আর কোন ক্ষোভ-বিক্ষোভ নেই। শীঘ্রই সকলে মিলে প্রচারে নেমে পড়বেন। তবে নির্বাচনের মুখে দলের অন্দরের এই দ্বন্দ্ব নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে দল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.