শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: বোর্ড গঠনের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই তপ্ত হচ্ছে জলপাইগুড়ির রাজনীতি। দলবদল, প্রার্থী কেনাবেচার পাশাপাশি এবার গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রতিনিধি ও পরিবারের সদস্যদের অপহরণের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে জলপাইগুড়ি শিলিগুড়ি জাতীয় সড়কের রানিনগর সড়ক অবরোধ করলেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। অভিযোগ, রবিবার রানিনগর বামন পাড়া বুথের বিজেপির নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য পূর্নিমা রায় ও তাঁর স্বামী বুথ সহ সভাপতি অমর কুমার রায়কে অপহরণ করা হয়েছে। অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে। কৃষ্ণ দাসের দাবি, “কাউকে অপহরণ করা হয়নি। স্বেচ্ছায় এসেছেন সকলে।”
জলপাইগুড়ির সদর ব্লকের বেলাকোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ২৯। তার মধ্যে বিজেপির দখলে ১৫টি আসন। তৃণমূল পেয়েছে ১২টি। ২টি আসন দখল করেছে নির্দল প্রার্থীরা। বিজেপির অভিযোগ, ভোটে ধরাশায়ী হওয়ার পর থেকে বিজেপির নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দলে টানতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। ভয়, প্রলোভন-সহ নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করছিল। এবার সরাসরি তৃণমূল অপহরণের রাস্তায় হাঁটল বলেই দাবি বিজেপির।
রানিনগর বামন পাড়া বুথের বিজেপির নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রতিনিধি পূর্ণিমা রায়ের ছেলে রাহুল রায়ের অভিযোগ, রবিবার বিকেলে তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন বাড়িতে আসে। তাঁর মা পূর্নিমা রায় ও বাবা অমর কুমার রায়কে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অমরবাবু দীর্ঘদিনের বিজেপি কর্মী এবং বামনপাড়া বুথের সহ সভাপতি। রাহুল জানান, রাত পর্যন্ত বাবা, মা বাড়ি ফিরে না আসায় পুলিশের দারস্থ হন। কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় সোমবার রানিনগর সড়ক অবরোধ করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা।
এদিকে, বিজেপি যখন পথ অবরোধে ব্যস্ত তখন পূর্ণিমা রায় ও তাঁর স্বামী অমর কুমার রায়ের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের এসসি এসটি সেলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি কৃষ্ণ দাস। সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বামী, স্ত্রী দু’জনেই দাবি করেন, তাঁদের অপহরণ করা হয়নি। বিজেপিতে থেকে এলাকার মানুষের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। বুঝতে পেরেই তৃণমূলে যোগ দিলেন তারা। সকাল থেকে বিজেপি কর্মীদের অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়। বিজেপির যুব মোর্চার জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি পলেন ঘোষ বলেন, “তৃণমূল নেতা ও তাঁর দলবল আমাদের নির্বাচিত পঞ্চায়েত প্রতিনিধি এবং বামন পাড়া বুথের সহ সভাপতিকে অপহরণ করে আটকে রেখেছে। পুলিশকে অভিযোগ করা হলেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না।” দ্রুত সকলকে মুক্তির দাবি জানান তাঁরা।
পরে কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর অবরোধ তুলে নেন বিজেপি কর্মীরা। পুলিশের দাবি, অপহরণ হয়নি। স্বেচ্ছায় দলবদল করেছেন তাঁরা। একই দাবি তৃণমূলের এসসি এসটি সেলের সভাপতি কৃষ্ণ দাসের। তাঁর দাবি, “যারা এসেছেন স্বেচ্ছায় এসেছেন। বিজেপি বেলাকোবা গ্রাম পঞ্চায়েত দখলে রাখতে পারবে না বুঝতে পেরেই সহানুভূতি আদায়ের জন্য নাটক করছে বিজেপি।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.