বাবুল হক, মালদহ: মালদহের (Maldah) সুজাপুরে প্লাস্টিক কারখানার বিস্ফোরণস্থলে গিয়ে বাধা পেল বিজেপি প্রতিনিধিদল। স্থানীয়রাই তাঁদের ঘটনাস্থলে ঢুকতে দেননি। তদন্তের স্বার্থে এলাকাটি দ্বিস্তরীয় বলয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। ফলে সেই ব্যারিকেড পেরতে বাধা দিয়েছে পুলিশও। আর তাতেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, ওখানে বিজেপিকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। তার কারণ, বিজেপি প্রতিনিধিরা গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে কথাবার্তা বলে আসল সত্যটা জানত, তা চাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে এখন।
বৃহস্পতিবার বেলায় ৩৪ নং জাতীয় সড়কের পাশে প্লাস্টিক কারখানা আচমকাই ভয়ংকর বিস্ফোরণে (Blast) কেঁপে ওঠে। মৃত্যু হয় ৬ জনের। কারখানার ছাদ উড়ে যায়, মেশিন থেকে বিস্ফোরণ হওয়ায় সেই জায়গায় বড়সড় গর্ত তৈরি হয়। এই বিস্ফোরণ কতটা ভয়াবহ, তা ভেবে এখনও শিউরে উঠছেন গ্রামবাসীরা। সরকারের তরফে বৃহস্পতিবার হতাহতদের জন্য আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করে তা পরিবারগুলির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, ওখানে প্লাস্টিক কারখানার আড়ালে অবৈধ বোমা কারখানা চলছিল, তাই এত বড় বিস্ফোরণ। এনআইএ তদন্তের দাবিতে সরব হয় রাজ্য বিজেপি।
শুক্রবার দুপুরে দিকে এলাকা পরিদর্শনে যান স্থানীয় বিজেপি নেত্রী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরি, তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও বেশ কয়েকজন। জানা গিয়েছে, সেসময় মুসলিম অধ্যুষিত এলাকার বেশিরভাগ মানুষই গিয়েছিলেন মসজিদে নমাজ পড়তে। পাড়া ফাঁকাই ছিল। এমন সময়ে সেখানে বিজেপি প্রতিনিধিরা উপস্থিত হলে কারও সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। পাড়ারই কয়েকজন যুবক তাঁদের ঘিরে ধরে জিজ্ঞেস করেন, এমন অসময়ে কেন এসেছেন তাঁরা? কার সঙ্গেই বা কথা বলবেন? কথা না বলতে পারলে আসল ঘটনা জানবেনই বা কীভাবে? এসব প্রশ্নে জর্জরিত করে বিজেপি প্রতিনিধিদলকে কার্যত এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। বেরিয়ে এসে শ্রীরূপাদেবী অভিযোগ করেন, পুলিশ ইচ্ছা করেই তাঁদের ঢুকতে বাধা দিয়েছে। এতে তাঁরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ।
অন্যদিকে, পুলিশের বক্তব্য, দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তার স্বার্থে ঘটনাস্থলটি দ্বিস্তরীয় বলয়ে মুড়ে রাখা হয়েছে। সেখানে বিশেষজ্ঞ ছাড়া কারও প্রবেশাধিকার নেই। তাই সঙ্গ কারণেই বিজেপি প্রতিনিধিদেরও ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এদিন কলকাতা থেকে সেখানে গিয়েছিলেন এসটিএফের (STF) ৮ জন। তাঁরা নমুনা সংগ্রহ করেন, ঘটনাস্থলের ছবি তোলেন। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের যাওয়ার কথা থাকলেও, এদিন যাননি তাঁরা। এনআইএ এখনও সেখানে যাবে কি না, তা স্থির হয়নি। তবে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একটু ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ৬ জনের মৃত্যুর পরও কোনও মামলাই দায়ের করেনি পুলিশ। এ বিষয়ে মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার বক্তব্য, কারখানা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ধরেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তা স্পষ্ট হলে তবেই নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের হবে। এই যুক্তি মানতে নারাজ গ্রামবাসীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.