পলাশ পাত্র, তেহট্ট: ‘এত সহজে ছেড়ে দেব না। যারা সারদা-নারদার টাকা নিয়েছে সব প্যারেড করছে। সৌগত থেকে সুব্রত, কেউ ছাড় পাচ্ছে না। ইডি, সিবিআই অফিসে ধরনা দিচ্ছে।’ মঙ্গলবার করিমপুরে গিয়ে তৃণমূল নেতাদের এই ভাষাতেই আক্রমণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
এপ্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘ডাক হচ্ছে। আর চা খাচ্ছে। চা খাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ আসছে। যার কাছে চিঠি আসছে তার বিপি বেড়ে যাচ্ছে। সিবিআই, ইডি অফিস থেকে প্রেমপত্র আসছে। আর নেতারা ডাক্তারের কাছে যাচ্ছে। আসলে ওদের সুগার ও বিপি বেড়ে যাচ্ছে। তবে এটা তো সবে শুরু হয়েছে। দেখুন না আরও কতজনের নামে চিঠি আসবে। অনেকেরই পুজো দেখা হবে না। দুর্গাপুজোর সময় ভুবনেশ্বর কিংবা কটকে থাকতে হবে। আর জগন্নাথ দর্শন করতে হবে। পুজো দেখা হবে না। গরীব লোকের টাকা ঝাড়া। গ্রাম থেকে অনেক সবজিওয়ালা ও ভ্যানওয়ালা সারদায় টাকা রেখেছিলেন। তা জমিয়ে কেউ কাঁচাবাড়িতে পাকা ছাদ দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। কেউ মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য তো কেউ আবার ছেলের পড়াশোনার জন্য টাকা রাখছিলেন। কিন্তু, সব ঝেড়ে ফাঁক করে দিল। একলক্ষ কোটি টাকা গায়েব হয়ে গেল। আমরা জানি অনেকের চকচকে গাড়ি, বাড়ি, দামি জামাকাপড় ও বৌয়ের গলায় তিনটে হার সব ওই টাকায় হয়েছে। গরীব মানুষের টাকায় ফুটানি মারা হচ্ছে। কিন্তু, আমরা ঠিক করেছি কাউকে ভোগ করতে দেব না। গরীবের মারা টাকা ফিরিয়ে নাকে খত দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। না হলে ছোট নেতা হলে কৃষ্ণনগর, আলিপুর আর বড় নেতা হলে কটক কিংবা ভুবনেশ্বর জেলে ভাত খেতে হবে। কাউকে ছাড়া হবে না। যা বলেছি তাই করব। চিদম্বরনের মতো অত বড় নেতা যিনি মন্ত্রী ছিলেন। তিনিও এখন সিবিআই থেকে পালাতে চাইছেন। আর লালুপ্রসাদ তো জেলেই রয়েছেন।’
লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে ব্যালট পেপারে ভোট করানোর দাবি তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মঙ্গলবার সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন মমতার তীব্র সমালোচনা করেন দিলীপবাবু। লোকসভার সময় রাজ্যের আটটি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তারমধ্যে বিজেপি চারটে আসন জিতেছেন বলেও জানান। বলেন, ‘এই চারটের একটাও বিজেপির ছিল না। দিদিমণি ইভিএমে গন্ডগোল বলছেন। উনি জিতলে গন্ডগোল নয়। আমরা জিতলেই গন্ডগোল। এবার নির্বাচন হলেই আমরা জিতব।’
আচমকা তৃণমূল নেতাদের ফুলেফেঁপে ওঠা নিয়ে তাচ্ছিল্যের সুরে বলেন, ‘যাদের খাওয়ার টাকা জুটত না তাদের গাল এখন চকচক করছে। মুখে ক্রিম মাখছে। গালে মাংস জমেছে। একসময় যে নেতারা পঞ্চাশ পয়সার বিড়ি খেত তারা এখন পাঁচ টাকার সিগারেট খায়। যাদের ভাঙা সাইকেল ছিল তাদের বাইক হয়েছে। আর যাদের বাইক ছিল তারা এখন চার চাকার গাড়ি কিনেছে। এসব কার টাকা? কার টাকায় ফুটানি? ঝাড়া টাকা। সব খেটে খাওয়া গরীব মানুষের টাকা। পাবলিকের টাকা।’
তৃণমূলের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে এই বিজেপি নেতা বলেন, ‘পঞ্চায়েতে মনোনয়ন দিতে দাওনি তোমরা। ছাপ্পা মেরেছ। তোমাদের কী ফুল দিয়ে পুজো করব? যে যে ভাষায় বোঝে তাকে সে ভাষায় উত্তর দাও। সমস্ত জেলায় বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছে। উকিল, ডাক্তার মার খাচ্ছে। পুলিশের কোমর ভেঙে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পরিবর্তন চাইছেন। দীপাবলির পর ভোট হলে করিমপুর থেকে বিধায়ক হয়ে বিধানসভায় যাবে। মানুষের কথা বলবে। আমরাই স্বপ্নের বাংলা গড়ব।’
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.