রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: এগরার পর দত্তপুকুর (Duttapukur)। বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে (Blast) প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৭ জন। তবে স্থানীয়দের দাবি, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের বহু বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। আতঙ্কে সিঁটিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা তীব্র ভাষায় সমালোচনা শুরু করেছেন। নামখানা থেকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, নন্দীগ্রাম থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, বারুদের স্তূপে রয়েছে বাংলা। মুখ্যমন্ত্রী এসব নিয়ে উদাসীন।
রবিবার সকালে আচমকাই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বারাসত (Barasat) লাগোয়া দত্তপুকুর থানার নীলগঞ্জ ফাঁড়ির নীলগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মোছপোল পশ্চিমপাড়া অঞ্চল। প্রায় ধূলিসাৎ হয়ে যায় একটি দোতলা বাড়ি। আশপাশের অন্তত ১০০টি বাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয়দের দাবি, কেরামত এবং সামসুল দু’জনে মিলে বেআইনিভাবে বাজি তৈরি করত। ওই বাজি দোতলা বাড়িতে মজুত করে রাখা হত। তা ফেটেই এমন বীভৎস ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় বাজি কারখানা চললেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলেই অভিযোগ। পরিবর্তে পুলিশ এখান থেকে তোলাবাজি করত বলেও দাবি স্থানীয়দের। এই ঘটনার সঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক রথীন ঘোষেরও (Rathin Ghosh) মদত ছিল বলেই অভিযোগ।
একই অভিযোগ শোনা গেল সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীদের (Suvendu Adhikari) গলায়ও। শুভেন্দুর নির্দিষ্ট অভিযোগ, ”এগরায় অত বড় বিস্ফোরণের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধে ব্যবস্থা নেবেন। লম্বা-চওড়া কথা বলেছিলেন। কিন্তু কোথায় কী? উনি ব্যস্ত চোরেদের বাঁচাতে। আর এদিকে যা হওয়ার তাই। গোটা রাজ্যটাই তো বেআইনি।” সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar)দাবি, ”ওসব জায়গা থেকে তো তৃণমূল নেতারা তোলা আদায় করে। যতদিন এখানে তৃণমূলের সরকার থাকবে, ততদিন এসব হবে। মুখ্যমন্ত্রী চাইছেনটা কী? গোটা রাজ্য শ্মশানে পরিণত হোক?” খাগড়াগড়ের মতো দত্তপুকুরের ঘটনায়ও জঙ্গি যোগ থাকতে পারে, এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী, বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (Santanu Thakur) ৷ অতীতের বাজি কারখানার বিস্ফোরণের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গকেও কটাক্ষ করেন তিনি৷ এই ঘটনায় এনআইএ (NIA) তদন্ত চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছে রাজ্য বিজেপি।
এদিকে, এদিন উত্তরবঙ্গে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C V Anand Bose)। তাঁকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, তিনি জানান যে ঘটনা সবিস্তারে জানার পর এ বিষয়ে মন্তব্য করবেন। তবে যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তদন্ত চলবে। ইতিমধ্যেই বিস্ফোরণস্থলে পৌঁছেছে সিআইডি (CID), বম্ব স্কোয়াড।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.