ফাইল ফটো
রূপায়ন গঙ্গোপাধ্যায়: পুরভোটে বিজেপির প্রার্থী হতে চেয়ে ভুড়ি ভুড়ি আবেদন জমা দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডের জন্য জমা পড়েছে দেড় হাজার আবেদনপত্র। তথৈবচ অবস্থা বাকি পুরসভাগুলিরও। ফলে প্রার্থী হতে না পারলে অন্তর্দ্বন্দ্বের সম্ভবনা চূড়ান্ত। সই সম্ভবনা এড়াতে নয়া কৌশল নিয়েছে বিজেপি। প্রার্থী হওয়ার আবেদনের সঙ্গেই তাদের মুচলেকা দিতে হচ্ছে, দল যদি তাদের প্রার্থী না করে তাহলে দলের বিরুদ্ধে কোনও বিদ্রোহ করা যাবে না বা ক্ষোভ-বিক্ষোভ করা চলবে না। পুরভোটে প্রার্থী হতে না পেরে যাতে কেউ প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ না করে, সেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ আগাম সামাল দিতে দলীয় কোন্দল ঠেকাতেই বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যা এককথায় গেরুয়া শিবিরে নজিরবিহীন। এই মুচলেকা দেওয়ার বিষয়টি মঙ্গলবার কলকাতা পুরভোট নিয়ে এক বৈঠকে জানিয়ে দিয়ে গিয়েছেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
শুধুমাত্র কলকাতা পুরভোটেই প্রার্থী হতে চেয়ে প্রায় দেড় হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে রাজ্য বিজেপি দফতরে। কলকাতা পুরসভার ওয়ার্ড সংখ্যা ১৪৪টি। এরকম হাওড়া পুরসভার ৬৬টি ওয়ার্ডেও প্রার্থী পদের দাবিদার চারশোর বেশি। গোটা রাজ্যে যে সব পুরসভায় নির্বাচন হবে সেখানে এক একটি ওয়ার্ডে প্রার্থীপদে কমপক্ষে তিন থেকে দশটি পর্যন্ত নামের তালিকা জমা পড়েছে। যেখানে দলের পুরনো নেতা=কর্মীরা রয়েছেন। আবার শাসকদল-সহ অন্য রাজনৈতিক দল থেকে আসা নেতা-কর্মীরাও আছেন। দলে এই নতুন-পুরনোদের দ্বন্দ্ব সমানে চলছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। দলের পুরনো নেতা-কর্মীরা চাইছেন অধিকাংশ ওয়ার্ডে তাদের মধ্যে থেকে প্রার্থী করা হোক। এদিকে, দলের তরফে বলে দেওয়া হয়েছে, ওয়ার্ডে জেতার ক্ষমতা রয়েছে সেরকমদেরই প্রার্থী করা হবে। সেক্ষেত্রে শাসকদল থেকে আসা অনেকেই প্রার্থীপদের দাবিদার। আবার কোনও কোনও ওয়ার্ডে সেলিব্রিটি ও বিশিষ্টজনদেরও প্রার্থী করা হবে। তাই দলের নেতা-কর্মীরা যারা প্রার্থী হতে পারবেন না তারা যাতে পরে ক্ষোভ না দেখান সেজন্যই আগেভাগে এইধরনের মুচলেকা।
মুচলেকায় লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে, “যদি আমি প্রার্থী হতে না পারি তাহলেও দলের স্বার্থে সকলে মিলে কাজ করব। যিনি প্রার্থী হবেন তাঁর হয়ে প্রচার করব।” সম্প্রতি পুরভোট নিয়ে আরেকটি দলীয় বৈঠকেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বার্তা দিয়েছিল, দল যাকে প্রার্থী করবে সকলকেই তাঁকে সহযোগিতা করতে হবে। পুরসভার ভোটে টিকিট পাওয়া নিয়ে দলের মধ্যে কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভের পরিবেশ যেন না থাকে। সেই মুখের বার্তাই শুধু নয়। প্রার্থী হতে চেয়ে যাঁরা আবেদন করছেন তাঁদের কাছ থেকে এবার মুচলেকাও লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.