নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: হেরে যাওয়া বুথ সমীক্ষা কর্মসূচিতে বাংলার সিংহভাগ বিজেপি (BJP) সাংসদই তাঁদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারলেন না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে সাংসদ, অধিকাংশই নিজেদের লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ১০০টি হেরে যাওয়া বুথে সমীক্ষার কাজ সারতে পারেননি। তাঁদের কাজের অসমাপ্ত রিপোর্টই জমা পড়েছে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে।
মাসখানেক আগেই কেন্দ্রীয় বিজেপি বুথ স্তরকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল। যাতে প্রাথমিকভাবে দেশের ৭৪ হাজার বুথ চিহ্নিত করে সেখানে দল কী কারণে হেরেছে, কত ভোট পেয়েছে, সেখানে বিজেপির কোন নেতা রয়েছেন– সব কিছু নিয়ে বিশদ সমীক্ষা করে শাহ-নাড্ডাদের তৈরি করা কেন্দ্রীয় বুথ সমীক্ষা কমিটির কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি জয় পণ্ডার নেতৃত্বাধীন সেই কমিটিতে রয়েছেন বঙ্গ বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষও (Dilip Ghosh)। এই কর্মসূচিতেই রাজ্যের প্রতিটি বিজেপি সাংসদকে তাঁদের লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ১০০টি বুথ এবং বিধায়কদের তাঁদের বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ২৫টি করে হেরে যাওয়া বুথে সমীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বিজেপি পুরো জুলাই মাস জুড়ে এই কর্মসূচি চালিয়েছে। তারপরে সমস্ত রাজ্য থেকে বুথ কমিটির কাছে রিপোর্ট জমা পড়েছে।
সূত্রের খবর, রাজ্যের মাত্র দুই সাংসদ প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ও বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder) ছাড়া আর কোনও সাংসদই ১০০টি হেরে যাওয়া বুথে সমীক্ষার কাজ শেষ করতে পারেননি। এই দু’জন ছাড়া একমাত্র পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডির সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছেছেন। তিনি প্রায় ৯০টি হেরে যাওয়া বুথের কাজ শেষ করতে পেরেছেন। বাকি সাংসদদের মধ্যে অধিকাংশের কাজ হয়েছে কারও অর্ধেক, আবার কারও সিকিভাগ।
দিলীপ অবশ্য লক্ষ্যমাত্রা পার করে ১০১টি হেরে যাওয়া বুথে সমীক্ষার কাজ করেছেন বলেই খবর। কমিটিতে বাংলা থেকে তিনি থাকা সত্ত্বেও বাংলার সাংসদদের কাজ কেন সম্পূর্ণ হয়নি, তা নিয়ে কমিটির তরফে উষ্মা প্রকাশ করা হয়েছে। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে বুথ সংক্রান্ত নানা কাজ, সমীক্ষা থেকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে দিলীপের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে চলতে বলা হয়েছে। রাজ্যে বিজেপির সংগঠন মজবুত করার ক্ষেত্রে দিলীপের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর জন্য বঙ্গ বিজেপিকে আগেই নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যার ফলস্বরূপ, আগস্ট মাসে দিল্লি সফরে এসে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রথমবার দিলীপের দিল্লির বাসভবনে গিয়ে একান্ত বৈঠক করেছেন। আবার একই রাস্তায় হেঁটে সুকান্তও বর্তমানে দিলীপের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনা করছেন, পরামর্শও নিচ্ছেন। তবে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের ক্ষেত্রে এখনই দিলীপকে সামনে আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই আন্দোলনের রাশ আপাতত বঙ্গ বিজেপির বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর হাতেই রাখতে চান শাহ-নাড্ডারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.