Advertisement
Advertisement

Breaking News

BJP

ভোটের মুখে রাজ্যভাগের দাবিতে ফের সরব BJP বিধায়ক, এবার সঙ্গী দলের ‘আদি’ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা

ফের পৃথক রাজ্যের তাস খেলছে বিজেপি!

BJP MLA with workers demand separate state for hill area | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:February 28, 2024 9:37 pm
  • Updated:February 29, 2024 4:14 pm  

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: এতোদিন ছিল বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলা থেকে বিজেপি বিধায়কদের একাংশ পৃথক রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করে পরে বিতর্কের চাপে চুপ করেছেন। এবার লোকসভা নির্বাচনের মুখে দলের হাইকমান্ডকে চাপে রাখতে সেই পুরনো দাবি সামনে রেখে উত্তরের গেরুয়া শিবিরের ‘আদি’ বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা জোট বাধতে শুরু করেছেন। অভিযোগ, ওই কর্মকাণ্ডের নেতৃত্বে রয়েছেন দলেরই কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক। সুর চড়াতে পাহাড় ছাড়াও সমতলের কয়েকজন দলীয় বিধায়কের সঙ্গে ইতিমধ্যে বৈঠক সেরেছেন তিনি। তারা রীতিমতো আন্দোলনের হুমকি দেওয়ায় গেরুয়া শিবিরের অন্দরে অস্বস্তি বেড়েছে। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, সাংগঠনিক বেহাল পরিস্থিতি সামাল দিতেই কি কৌসুলি খেলা শুরু হয়েছে! না হলে কেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব মুখে কুলুপ এঁটেছেন। বিরোধীরাও করছেন পাহাড় সহ চা বাগানের সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ হয়ে নির্বাচনের মুখে নজর ঘুরিয়ে ভোটের অঙ্ক বাড়াতে রাজ্য ভাগের আবেগ উসকে দেওয়ার খেলায় মেতেছে বিজেপি।

যদিও বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তথা দলের কিষাণ মোর্চার উত্তরবঙ্গের আহ্বায়ক শ্যামচাঁদ ঘোষ ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “দলের রাজ্য নেতৃত্ব পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন। এমনকী দলের পর্যবেক্ষকের কাছেও কয়েকজন বিধায়কের ভূমিকা নিয়ে রিপোর্ট পৌঁছেছে। যা ব্যবস্থা নেওয়ার তাঁরাই নেবেন।” কিন্তু দলীয় নেতৃত্বের কোনও সতর্কতাকেই যে তাঁরা আমল দিতে নারাজ ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিচ্ছেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। তিনি বলেন, “এতদিন একা পৃথক রাজ্যের দাবিতে কথা বলেছি। এখন প্রত্যেকে একসঙ্গে বলব। স্বাধীনতার আগে থেকে এখানকার ভূমিপুত্ররা বঞ্চিত। তাঁদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পৃথক রাজ্যের দাবিতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বৈঠক চলছে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘পরিবারের সঙ্গেই থাকতে চাই’, কাতর আর্জি শিলদা EFR ক্যাম্প হামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের]

বিক্ষুব্ধ ‘আদি’ বিজেপি নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে তিনজন বিধায়ক এবং তাঁদের অনুগামীদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিষ্ণুপ্রসাদ। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়িতে একই ইস্যুতে তাঁর বৈঠক ছিল। কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক জানান, পাহাড়, ডুয়ার্স, তরাই সর্বত্র বৈঠক চলছে। তাঁর হুমকি, “দলের তরফে ভূমিপুত্রদের প্রার্থী করা না হলে আমরা বিরোধিতা করব। উত্তরবঙ্গ জুড়ে বঞ্চনার বিরুদ্ধে আন্দোলন হবে।” বিজেপির অন্দরের খবর, গঙ্গারামপুর, গাজোলের বিধায়ক পৃথক রাজ্যের দাবিতে খোলাখুলি প্রচারে নেমেছেন। যদিও বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা-সহ বিজেপি বিধায়কদের ওই ভূমিকা নতুন কিছু মনে করছেন না দার্জিলিং জেলা সিপিএম সম্পাদক সমন পাঠক। তিনি বলেন, “ভোট সামনে তাই খেলা শুরু হয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি নেতৃত্ব ক্ষমতায় এলে পাহাড় এবং চা বাগান সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। একটিও হয়নি। এবার ভোট চাইতে গেলে কৈফিয়ত দিতে হবে। তাই নজর ঘোরাতে কৌশলে রাজ্য ভাগের ইস্যু সামনে আনা হচ্ছে।”

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরের সমতলের ভূমিপুত্রদের একচেটিয়া ভোট তুলে নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। এবার বিজেপির বিরোধিতায় সরব হয়েছে কামতাপুর পিপলস পার্টি (কেপিপি) সহ কয়েকটি আঞ্চলিক দল। পাহাড়ে গত নির্বাচনে ছিল বিমল গুরুংয়ের ম্যাজিক। এবার অনীত থাপার রাজনৈতিক কর্মসূচির চাপে সেখানে বিজেপি, গুরুং, জিএনএলএফ কোণঠাসা। ওই কারণে বিজেপির কাছে পৃথক রাজ্যের তাস খেলা জরুরি হয়েছে। সেটা বিক্ষুব্ধ ‘আদি’ নেতাদের দিয়ে সংগঠিত করে দলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দায় ঝেরে ফেলার পথ খুলে রেখেছেন। অথচ এই পথে কেপিপি-সহ পৃথক রাজ্যের দাবিতে সরব সংগঠনগুলোর সমর্থন সহজে চলে আসবে। যদিও কেপিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ বর্মন বলেন, “আমরা বিজেপির খেলা খুব ভালো জানি। পৃথক রাজ্যের দাবিতে ওদের আন্দোলন করতে হবে কেন! কেন্দ্রে ওরাই তো বসে আছেন। এভাবে ছলচাতুরি করে কতদিন চলবে!”

[আরও পড়ুন: ‘এতো দ্বন্দ্ব কেন?’ বাঁকুড়ার জেলা সভাধিপতি ও কর্মাধ্যক্ষদের ‘ধমক’ মুখ্যমন্ত্রীর

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement